শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: সেই জাহাজের চালকসহ ৫ জন রিমান্ডে

উদ্ধার করা হয়েছে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমএল সাবিত আল হাসান
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের কয়লাঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে ৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সেই কার্গো জাহাজের চালকসহ ৫ জনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে নৌ পুলিশ।

আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ূন কবিরের আদালতে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে হাজির করা হয়। এ সময় চালকসহ পাঁচজনের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত চালকসহ ওই পাঁচজনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মামলার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন, কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল, সেসব তথ্য উদ্‌ঘাটনের লক্ষ্যে জাহাজের গ্রেপ্তারকৃত মাস্টার ওয়াহিদুজ্জামান, চালক মজনু মোল্লা, সুকানি আনোয়ার মল্লিক, গ্রিজার ফারহান মোল্লা ও হৃদয় হাওলাদারকে দুই দিনের পুলিশি রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সুকানি নাজমুল মোল্লা, ডেক অ্যাটেনডেন্ট মো. আবদুল্লাহ, লস্কর রাজিবুল ইসলাম, নূর ইসলাম, মো. সাগর, সাকিব সরদার, মো. আফসার, আলিম শেখ ও বাবুর্চি বাশার শেখ—এই আসামিদের আইনজীবীরা জামিন আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া এলাকায় মেঘনা নদী থেকে এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজের চালকসহ ১৪ জনকে আটক করে কোস্টগার্ড। পরে তাঁদের নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্যর করা মামলায় নৌ পুলিশ তাঁদের আদালতে হাজির করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইউনুস মোল্লা বলেন, সাবিত আল হাসান নামের লঞ্চটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে পাঁচজন জড়িত ছিলেন। তাই আদালতে তাঁদের রিমান্ড আবেদন করা হয়।

আরও পড়ুন

গত রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি সাবিত আল হাসানকে শহরের কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজ এসকেএল-৩ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও নিখোঁজ থাকেন অনেকে। লঞ্চডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের লাশ দাফনের জন্য সরকারিভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পৃথক চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘সাবিত আল হাসান’ ডুবে ৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে অভিযুক্ত অজ্ঞাত কার্গো জাহাজের চালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে বন্দর থানায় মামলা করেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) বাবু লাল বৈদ্য।

গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পৃথক তদন্ত কমিটি গণশুনানি করে। এদিকে ঘটনার পর পলাতক থাকায় জাহাজের ওপরের অংশের রং পরিবর্তন করে নৌপথে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছে। জাহাজটির মালিক বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ শেখ সারহান নাসেরের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসকে লজিস্টিক।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন