সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের চেষ্টা, সোনাদিয়া থেকে ১৪৭ রোহিঙ্গা উদ্ধার

মালয়েশিয়া পাচারের সময় মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে উদ্ধার রোহিঙ্গা দল—
ছবি: প্রথম আলো

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়া পাচারকালে কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া উপকূল থেকে ১৪৭ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই রোহিঙ্গারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা। আজ সোমবার দুপুরে সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য রোহিঙ্গাদের সোনাদিয়া দ্বীপে জড়ো করা হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল দালাল চক্র। কিন্তু তার আগে রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে পাচারের খপ্পর থেকে রক্ষা করে পুলিশ।

রফিকুল ইসলাম বলেন, রাতে জোয়ার শুরু হলে সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে উদ্ধার রোহিঙ্গাদের একাধিক নৌযানে (গামবোটে) তুলে প্রথমে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে আনা হবে। সেখান থেকে বাসে তুলে উখিয়ার ট্রানজিট ঘাটে হস্তান্তর করা হবে তাঁদের।

এ ঘটনায় জড়িত দালাল চক্রের সদস্যদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি ও মেয়েদের উপযুক্ত পাত্রের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দালালেরা রোহিঙ্গাদের ট্রলারে ওঠায়।

সোমবার রাত আটটার দিকে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশির ভাগ উখিয়া কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে থাকেন। তাঁদের মধ্যে ৭৩ জন নারী, শিশু ২৩ ও পুরুষ ৫১ জন।

স্থানীয় লোকজন বলেছেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে সোনাদিয়ার পশ্চিম সৈকতে শতাধিক নারী শিশুর জটলা দেখে সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে দেখেন তাঁরা সবাই রোহিঙ্গা। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গাদের বালুচরে জড়ো করে তাঁরা স্থানীয় কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শেখ কামালকে খবর দেন। চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে মহেশখালী থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সোনাদিয়া দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪৭ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. শেখ কামাল বলেন, কয়েকজন রোহিঙ্গা তাঁকে জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে দালাল চক্র তাঁদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০-৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দালাল চক্র জঙ্গলে আত্মগোপন করে।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, কয়েক বছর সমুদ্রপথে মানব পাচার বন্ধ থাকলেও এখন রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারে তৎপর হয়ে উঠেছে দালাল চক্র। সমুদ্র শান্ত থাকলে মানব পাচার বেড়ে যায়।