সরকারি ঘর তৈরিতে অনিয়ম তদন্ত করবে দুটি কমিটি

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়নসহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত) শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় তৈরি বাড়ি। পূর্ব মৌকুড়ি গ্রাম, বালিয়াকান্দি সদর উপজেলা, রাজবাড়ীফাইল ছবি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে সমিতির নেতাদের টাকা নেওয়া ও নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


সমিতির নেতাদের টাকা নেওয়ার অভিযোগে গত রোববার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘নখের খোঁচায় উঠে যাচ্ছে পলেস্তারা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সূত্রে জানা যায়, টাকা নেওয়া–সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রধান করা হয়েছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবু দারদাকে। অন্যরা হলেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী বিধান কুমার দাস।


নির্মাণবিষয়ক অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর বাদশাকে। অন্য দুই সদস্য হলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সাগর হালদার।

ইউএনও সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দি উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত) শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১৫টি টিনশেডের আধা পাকা ঘরের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায়। প্রথম কিস্তিতে দুই কক্ষবিশিষ্ট ১০টি ঘরের প্রতিটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর দ্বিতীয় কিস্তিতে পাঁচটি ঘরের (দুই কক্ষের একটি টিনশেড ঘর, রান্নার স্থান ও শৌচাগার) জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

সুবিধাভোগী সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। কেউ দিনমজুর, কেউবা ভ্যানচালক। ভিটে ছাড়া আর কোনো জায়গাজমি নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিযোগ করেন, সমিতিগুলোর সভাপতিরা প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে অর্থ আদায় করেন। প্রতিটি ঘর বাবদ ৪০ হাজার টাকা নেন। এমনকি ঘরের নির্মাণকাজও কোনো রকমে সারা হয়েছে। একজন অভিযোগ করেন, ঘরের কাজ এতই নিম্নমানের যে নখের খোঁচায় ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

ইউএনও এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, নির্মাণকাজ–সংক্রান্ত একটি কমিটি করা হয়েছে। অন্য কমিটি করা হয়েছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করতে। উভয় কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।