‘সাংসদের গাড়িতে হামলায় পুলিশ দায়ী’

সাংসদ মোকাব্বির খানের গাড়িতে ঢিল ছোড়ার ঘটনার প্রতিবাদে ‘উপজেলাবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধন। আজ দুপুরে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের বাসিয়া সেতু এলাকায়।
প্রথম আলো

সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সাংসদ মোকাব্বির খানের গাড়িতে হামলার জন্য পুলিশ দায়ী। এই দায় এড়াতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য পুলিশ ও প্রশাসনকেই উদ্যোগী হতে হবে।

আজ শনিবার বিশ্বনাথের বাসিয়া নদীর সেতুর ওপর ‘উপজেলাবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধন থেকে বক্তারা এই দাবি জানান।

এর আগে ১৬ আগস্ট একই ঘটনায় হওয়া মামলাকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ দাবি করে মানববন্ধন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ। সেখানে গ্রেপ্তার হওয়া দবির আহমদের মুক্তি ও আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

১০ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভায় যোগ দিতে গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ মোকাব্বির বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদে যান। এ সময় পরিষদের ফটকে তাঁর গাড়িতে ঢিল ছোড়া হয়।

পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় পরদিন রাতে বিশ্বনাথ থানায় সাংসদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) অসিত রঞ্জন দেব দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা দবির আহমদ, উপজেলা যুবলীগের সদস্য কামরুজ্জামান ও জুনাব আলীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ দবিরকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিরা পলাতক।

উপজেলা গণফোরাম সূত্রে জানা যায়, ওই ঘটনার পর গণফোরামের উপজেলা কমিটি নীরব ছিল। এ অবস্থায় ১২ আগস্ট জেলা গণফোরাম উপজেলা কমিটি স্থগিত হয়। এ কারণে আজ দুপুরে ‘উপজেলাবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। এতে গণফোরামের নেতা-কর্মী ছাড়া অন্যরাও অংশ নেন।

মানববন্ধন চলাকালে উপজেলা গণফোরামের স্থগিত কমিটির আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা গণফোরামের আহ্বায়ক আনসার খান। বক্তারা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্বে অবহেলায় সাংসদের গাড়িতে ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন।

গণফোরামের আহ্বায়ক আনসার খান বলেন, ‘এমপি (সাংসদ) মোকাব্বির খান উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণে সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তখন সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়িতে হামলা চালায়। সেখানে উপস্থিত থাকা পুলিশের সদস্যরা এমপিকে রক্ষা না করে ওই হামলা উপভোগ করেন। পুলিশ জানে না কোনো দায়িত্ব পালন না করে অজান্তেই তারা হামলার সঙ্গে নিজেদের জড়িয়েছে। এই হামলার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন দায়ী। আমরা মামলার আসামিদের সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা দেখতে চাই।’

হুসাইন আহমদের সঞ্চালনায় মানববন্ধন চলাকালে আরও বক্তৃতা দেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, মহানগর গণফোরামের আহ্বায়ক এমদাদুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজাদ আলী, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আহমদ, বিশ্বনাথ দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুমান আহমদ প্রমুখ।

জানতে চাইলে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, পুলিশ সেখানে দায়িত্ব পালন করার কারণে বড় কোনো অঘটন ঘটেনি। ঘটনার পর থেকে আসামিরা এলাকাছাড়া। পুলিশ ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

এর আগে ১৬ আগস্ট একই ঘটনায় হওয়া মামলাকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ দাবি করে মানববন্ধন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ। সেখানে গ্রেপ্তার হওয়া দবির আহমদের মুক্তি ও আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

আরও পড়ুন