অভিবাসী কর্মীদের ক্ষতিপূরণ পেতে চুক্তি করা জরুরি: আইএলও মহাপরিচালক

সিঙ্গাপুরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মহাপরিচালক গিলবার্ট হংবো
ছবি: প্রথম আলো

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো এশিয়া মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে কর্মসংস্থানের চিত্র আগের অবস্থায় না ফিরলেও ইতিবাচক ধারায় আছে। এমন প্রেক্ষাপটে অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের স্বার্থে অভিবাসী প্রেরণকারী দেশগুলোকে বিভিন্ন স্তরে সোচ্চার হতে হবে। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) আঞ্চলিক বৈঠকের ফাঁকে সংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট হংবো এসব কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের একটি কনভেনশন সেন্টারে আইএলওর উদ্যোগে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও আরব অঞ্চলের চার দিনের আঞ্চলিক বৈঠক শুরু হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক গিলবার্ট হংবো গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ মধ্যপ্রাচ্যে কর্মী পাঠায়। কিন্তু কর্মরত অবস্থায় অভিবাসী কর্মী আহত ও নিহত হওয়ার পর ক্ষতিপূরণের দাবি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আইএলওর ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে গিলবার্ট হংবো বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের বিষয়টিকে আমি নীতিনৈতিকতার প্রেক্ষাপট থেকে বিবেচনা করি। যে পরিবার আপনজনকে হারিয়েছে, তাদের এগিয়ে এসে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে হবে। নিহত কর্মীর দেশে আইএলও, ট্রেড ইউনিয়ন কিংবা যেকোনো সংস্থা আছে। এ ক্ষেত্রে তারাও ভূমিকা রাখতে পারে।’

অভিবাসী কর্মীর মর্যাদা, ক্ষতিপূরণসহ সব বিষয়ে সুরক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ফিলিপাইনের চুক্তির প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন আইএলও মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘ফিলিপাইনের উদাহরণ সামনে নিয়ে এলে দেখতে পাই, কয়েক বছর ধরে কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে তারা চুক্তি সই করেছে। এতে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে তারা। মাঝেমধ্যে আমরা শুনতে পাই, যে দেশগুলো কর্মী নিয়ে থাকে, তারা চুক্তি সই করতে চায় না। আমি মনে করি, বিষয়টি নিয়ে ধারণা আর বাস্তবতার মধ্যে পার্থক্য আছে। ফিলিপাইন যে চুক্তি করেছে, তাতে ঘাটতি নেই—এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে তারা ওই চুক্তির মাধ্যমে ন্যূনতম বেতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সম্ভাব্য মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও তারা যুক্ত করেছে ওই চুক্তিতে।’

এবারের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনে অভিবাসী কর্মীর মৃত্যুকে ঘিরে কাতারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বেশ সোচ্চার। এ ধরনের অভিযোগের মধ্যেই গত সপ্তাহে কাতার সফর করেছিলেন আইএলও মহাপরিচালক।

আরও পড়ুন

কাতারে নিহত অভিবাসী কর্মীদের মৃত্যু ঘিরে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে গিলবার্ট হংবো বলেন, ‘কাতার সরকার কর্মীদের বকেয়া বেতন হিসেবে ৩৫ কোটি ডলার দিতে তৈরি আছে। এখানে আমার প্রথম বার্তাটি হচ্ছে কাতারে যে অভিবাসী কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের নিজেদের দাবির ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে। নিকট অতীতে বাংলাদেশে তাজরীন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ আদায়ে ভূমিকা রেখেছিল আইএলও।’

আরও পড়ুন