প্রার্থনা, শুভেচ্ছা বিনিময় ও মঙ্গল কামনায় বড়দিন উদ্যাপন
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের জপমালা রানীর গির্জায় প্রার্থনা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদ্যাপন করছেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে গির্জাটি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গির্জায় গিয়ে দেখা যায়, ঢুকতেই সামনে লাল-সাদা পোশাকে সান্তা ক্লজের আদল সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাশেই ‘মেরি ক্রিসমাস’ লেখা সাজসজ্জা। সেখানে ছবি তুলছেন অনেকেই। গির্জার ঠিক সামনে শিশু যিশু কোলে মা মেরির ভাস্কর্য। তার পাশেও বড় করে লেখা ‘মেরি ক্রিসমাস’। গির্জার ভেতরে ও প্রাঙ্গণে বানানো হয়েছে ‘গোশালা’, যেখানে যিশু জন্ম নিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে সতর্ক অবস্থান নিয়ে আছেন।
গির্জার সহকারী পুরোহিত ফাদার চঞ্চল পেরেরা প্রথম আলোকে বলেন, যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে আজ সকাল সাতটায় এই গির্জায় প্রথম দফায় খ্রিষ্টযজ্ঞ বা প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে। দ্বিতীয় দফায় সকাল ৯টায় খ্রিষ্টযজ্ঞ শুরু হয়। চলে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। খ্রিষ্টযজ্ঞে যিশুখ্রিষ্টের জন্মকথা স্মরণ, পবিত্র বাইবেল পাঠ, বাণী সহভাগিতা, ধর্মীয় গান, সবার মঙ্গল প্রার্থনা করা হয়। খ্রিষ্টযজ্ঞ শেষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেদের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে থাকেন লিনা গোমেজ। মেয়েকে নিয়ে প্রার্থনায় এসেছেন তিনি। প্রার্থনা শেষে গোশালার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিশু যিশুর কাছে অনেক চাওয়া আর আশা থাকে। সেসব প্রত্যাশা যেন পূরণ করেন, আজকে সেই প্রার্থনা করেছেন তিনি। শুধু নিজের জন্য নয়, সবার জন্য প্রার্থনা করেছেন। বিশেষ করে যাঁদের চাকরি নেই তাঁরা যেন চাকরি পান, অসুস্থরা যেন সুস্থ হন, দুঃখীদের যেন দুঃখমোচন ঘটে।
লিনা আরও বলেন, গির্জা থেকে বাসায় ফিরে বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে আশীর্বাদ চাইবেন। এটাই রেওয়াজ। সবার বাসায় বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন থাকবে আজকের দিনে। এভাবেই প্রার্থনা ও আনন্দে উদ্যাপন করা হবে বড়দিন।
পরিমল গোমেজ স্ত্রী, মেয়ে, ছেলে ও ছেলের স্ত্রীকে নিয়ে জপমালা রানীর গির্জায় প্রার্থনায় অংশ নেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবার মনে আনন্দ যে এ লগ্নে যিশুখ্রিষ্ট এসেছিলেন।’
এ গির্জায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। তাঁরা চান, সব সম্প্রদায়ের সবাই যেন তাঁদের ধর্ম, আচার–অনুষ্ঠান নির্ভয়ে ও আনন্দে পালন করতে পারেন। এটাই সত্যিকার গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।