ইকোসাইডকে জেনোসাইডের মতো অপরাধ গণ্য করার সুপারিশ

জেনোসাইড বা গণহত্যার মতো ইকোসাইডকে (ইচ্ছাকৃত বা অবহেলার কারণে পরিবেশ, প্রতিবেশ ধ্বংস করা) অপরাধ হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ জন্য কমিটি প্রতিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংসের অপরাধকে দেশের প্রচলিত আইন ফৌজদারি কার্যবিধির অধীনে আনা বা নতুন আইন করতে বলেছে।

নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ
ফাইল ছবি

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, গণহত্যা যেমন অপরাধ ইকো সিস্টেম ধ্বংস করাও সেই ধরনের একটি অপরাধ বলে সংসদীয় কমিটি মনে করে। কারণ ইকো সিস্টেম না থাকলেও কেউ বাঁচতে পারবে না। এ জন্য প্রতিবেশের বিরুদ্ধে যে অপরাধগুলো হচ্ছে, এই ইকোসাইডকে অপরাধ হিসেবে প্রচলিত আইনের এখতিয়ারভুক্ত করতে বলেছে কমিটি।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, বন অধিদপ্তর গত ৮ মাসে ২ হাজার ৪৬৮ দশমিক ২০ একর জবরদখল হওয়া ভূমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকা বন বিভাগের ৬৪২ দশমিক ৫৮ একর, টাঙ্গাইল বন বিভাগের ৬৩৬ দশমিক ৪৯ একর, ময়মনসিংহ বন বিভাগের ১ দশমিক ৫০ একর, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ৭২৩ দশমিক ৪০ একর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ২৩০ দশমিক ৬৫ একর, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ১৪৪ দশমিক ১৫ একর, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের ২৪ দশমিক ১৯ একর, উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের ২৯ দশমিক ৭০ একর, সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহীর ১৯ দশমিক ৪৯ একর এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের ১৬ দশমিক শূন্য ৫ একর ভূমি রয়েছে।

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বনভূমি উদ্ধার কার্যক্রমে কমিটি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তাঁরা উদ্ধার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বলেছেন। কারণ যে গতিতে চলছে তাতে বছরের পর বছর সময় লেগে যাবে।

সাবের হোসেন বলেন, জাতিসংঘ কৃষি ও খাদ্য সংস্থার (এফএও) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সারা পৃথিবীতে বন উজাড় হওয়ার হার এক দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে এটা ২ দশমিক ৬ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে বনই থাকবে না। এটা কেন হচ্ছে তা কীভাবে রোধ করা হয় তার জন্য একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটি সদস্য বন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, সাংসদ রেজাউল করিম, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও শাহীন চাকলাদার বৈঠকে অংশ নেন।