টেকনাফের পানচাষিদের 'সর্বনাশ'

ঘূর্ণিঝড় কোমেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের অন্তত ৪ হাজার পানচাষি। তাঁদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকার।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। তবে কৃষকদের দাবি, উপজেলার ৯৫ শতাংশ পানবরজ তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকার।
কৃষকেরা জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি এবং খোলা বাঁধ দিয়ে ঢোকা লবণাক্ত পানি বরজে জমে যায়। পানি কয়েক দিন জমে থাকায় বেশির ভাগ পানগাছে পচন ধরে। এ ছাড়া ঝড়ে অনেক পানবরজ ভেঙে গেছে।
সাবরাংয়ের মন্ডলপাড়ার পানচাষি হামিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে আমার আয়ের একমাত্র উৎস পানবরজটি ভেঙে গেছে।’
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পল্লানপাড়া গ্রামের পানচাষি নুরুল আমিন বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে পান চাষ করছি। এ বছরের মতো এত বেশি ক্ষতি আর কখনো হয়নি। কৃষকেরা পান বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু এবার বরজ নষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাবেন।’
পান ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বলেন, মৌসুমের শুরুতে কিছু পান পাওয়া গেলেও এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান বলেন, টেকনাফের হাজারো কৃষক পান চাষের ওপর নির্ভরশীল। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় কোমেন ও জোয়ারের পানির আঘাতে তাঁর ইউনিয়নের প্রায় ৯৫ শতাংশ পানবরজ নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কৃষক এবার প্রায় ২ হাজার একর জমিতে পান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৮০০ একর জমির পান নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৪ হাজার কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ২০ কোটি টাকার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ বলেন, এবার পানের বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে বরজ পানিতে ডুবে গেছে। বরজে পানি আটকে পান পচে গেছে। এতে কৃষকের সর্বনাশ হয়েছে।