কক্সবাজারসহ তিন সমুদ্রবন্দরে মহাবিপৎসংকেত

নৌযানগুলো সাগর থেকে নিরাপদ স্থানে তোলা হচ্ছে
ছবি: গিয়াস উদ্দিন

এগিয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের তিন বন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বন্দর তিনটি হলো চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা। আর মোংলা সমুদ্রবন্দরে আগের দেওয়া ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল আছে। আজ শুক্রবার রাত ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বার্তায় এ ঘোষণা দেয়।

আজ বিকেলেই দেশের চার বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত উঠিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর রাতে মহাবিপৎসংকেত দেওয়া হলো। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজিজুর রহমান আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মোখা বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্ব উপকূলমুখী। আর সে জন্যই ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে তিন বন্দরকে।

বিশেষ বার্তায় বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। কাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত  ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।