শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে অনশন
শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন সুজন বড়ুয়া নামের এক ব্যক্তি। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে তিনি এই কর্মসূচি শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে তিন দিন অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
একই দাবিতে গত শনিবার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত সুজন বড়ুয়া এই এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেয়ে চন্দ্রিমা বড়ুয়া ও ছেলে অভিষেক বড়ুয়া। বাবার মতো তাঁরাও প্ল্যাকার্ড হাতে সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। আজকের কর্মসূচিতে বাবার পাশে ছেলেকে দেখা গেছে।
শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার সুজন বড়ুয়া চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা। মাঝবয়সী এই ব্যক্তি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য কেনাবেচার কাজ করেন।
নগরে শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে সুজন বড়ুয়া গত ২১ জুলাই কর্মসূচি শুরু করেন। তিনি ইতিমধ্যে ২১টি সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করেছেন।
সুজন বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক চালকই অপ্রয়োজনে হর্ন দিয়ে শব্দদূষণ করেন। বিষয়টি লক্ষ করে চালকদের সচেতন করার চেষ্টা করি। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। তাই আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত নিই।’
সুজন বড়ুয়া বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনশন করব। এর মধ্যে সরকার শব্দদূষণ বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তীকালে আরও বড় কর্মসূচি পালন করব।’
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, আবাসিক এলাকায় শব্দের সহনীয় মাত্রা দিনের বেলায় ৫০ ডেসিবেল। মিশ্র এলাকায় (আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্য) এলাকায় তা ৬০ ডেসিবেল। আর শিল্প এলাকায় ৭৫ ডেসিবেল পর্যন্ত।
গত বছর বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র যৌথ উদ্যোগে একটি গবেষণা করে। এতে বন্দরনগরে শব্দদূষণের চিত্র উঠে আসে।
গবেষণায় চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি মাত্রার শব্দ পাওয়া যায় কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায়। এই এলাকায় শব্দের মাত্রা ১৩০ ডেসিবেল। এরপর রয়েছে নতুনপাড়া এলাকা (বিআরটিসি বাস ডিপো)। সেখানে শব্দের মাত্রা ১২৫ দশমিক ৯ ডেসিবেল।
চট্টগ্রামের পরিবেশবাদীরা বলছেন, নগরে শব্দদূষণ বাড়ছে। এ-সংক্রান্ত আইন থাকলেও তা কেউ মানছে না। শব্দদূষণের প্রভাবে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ছে।