শৈত্যপ্রবাহ বিস্তারের আশঙ্কা, দুই বিভাগে বৃষ্টিরও সম্ভাবনা

শীতের সকালে কাজের সন্ধানে বের হয়েছেন কর্মজীবীরা। গায়ে গরম কাপড় মুড়ে রওনা হয়েছেন তাঁরা। গতকাল পাবনা বিসিক সড়ক এলাকায়ছবি: হাসান মাহমুদ

সকাল থেকে মেঘলা আকাশ। মাঝেমধে৵ সূর্যের দেখা পাওয়া গেছে। তবে শীতের তীব্রতাও ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের অনেক স্থানেই এমন অবস্থা ছিল। ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা খানিকটা বাড়লেও শীত তেমন কমেনি; বরং নওগাঁ জেলাসহ রংপুর বিভাগে চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আজ শুক্রবার আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কমে শীত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘন কুয়াশার কারণে আজ বিমান চলাচল, নৌপরিবহন ও সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আংশিক মেঘলা আকাশ থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে অন্যান্য এলাকায়।

রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল এক লাফে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রংপুর বিভাগ ও নওগাঁ জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে, ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বিস্তার লাভ করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে শীতের অনুভূতি বাড়ার আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে অধিদপ্তর।

আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা খানিকটা কমতে পারে। এমনটা দুই দিন থাকার পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক

রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল এক লাফে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা খানিকটা কমতে পারে। এমনটা দুই দিন থাকার পর তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে। ৩১ জানুয়ারি দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। ১ ও ২ ফেব্রুয়ারিও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

গতকাল শীতের পাশাপাশি ঢাকার বায়ু ছিল দুর্যোগপূর্ণ। সকালে বিশ্বের ১১০টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকা ছিল শীর্ষে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার নম্বর (স্কোর) ছিল ৪১১। এ নম্বরকে দুর্যোগপূর্ণ বলে ধরা হয়। বিশ্বে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সারায়েভো। এই শহরের স্কোর ছিল ৩৩৪।

আইকিউএয়ারের দেওয়া তালিকায় বলা হয়, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।

বিষয়টি নিয়ে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরেই ঢাকার বায়ুর মান দুর্যোগপূর্ণ। এ অবস্থা সম্পর্কে মানুষকে জানানো এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষাব্যবস্থা নেওয়াই প্রধান কাজ।