পানি ও স্যানিটেশন খাতে এমডিজির বৃত্তেই আটকে সরকার: হোসেন জিল্লুর রহমান

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমানছবি: ওয়াটার এইডের সৌজন্যে

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতের উন্নয়নে এখনো সরকার সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) অনেকটা আটকে আছে। এমডিজির লক্ষ্য ছিল সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা। তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) লক্ষ্য, সবার জন্য নিরাপদ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন নিশ্চিত করা। এমডিজির ওয়াশ খাতের তুলনায় এসডিজি যুগের ওয়াশ খাতের লক্ষ্যমাত্রা আরও জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান।

বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসি, ওয়াটারএইড, ফানসা, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অলসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া উচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ বাড়লেও নানা ধরনের বৈষম্য রয়ে গেছে। সামগ্রিকভাবে এ খাতে তিন ধরনের বৈষম্য লক্ষ করা যায়, যা সমাধান করা উচিত। এই লক্ষ্যমাত্রা সঠিক সময়ে অর্জন নিশ্চিত করতে হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৃদ্ধির হার এবং উন্নয়ন বাজেটের সঙ্গে ওয়াশ খাতের বরাদ্দকেও তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এডিপি বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন এবং সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। চর, হাওর, পাহাড়ি অঞ্চলসহ জলবায়ুগত ঝুঁকির আওতাধীন সুবিধাবঞ্চিত এলাকা এবং নগরগুলোর মধ্যকার বরাদ্দ বৈষম্য নিরসন করা প্রয়োজন।

হোসেন জিল্লুর বলেন, ‘২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায় আমরা ওয়াশের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫৯ শতাংশ এবং ৩৯ শতাংশ পূরণ করেছি। এসডিজি ৬ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য মাত্র ৬ বছর বাকি আছে। আমাদের শুধু ওয়াশ খাতের বরাদ্দ বাড়ালে হবে না বরং আরও গুরুত্বসহকারে আমাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রয়োজন।’

পরিবেশ রক্ষার জন্য, পাবলিক প্লেসসহ সব প্রতিষ্ঠানে নারী, শিশু এবং প্রতিবন্ধীবান্ধব স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানান হোসেন জিল্লুর।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপির দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় ওয়াশ খাতের বেশ প্রশংসনীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। যদিও বিশ্লেষণাত্মক রিপোর্ট দেখায় যে প্রবৃদ্ধি সামগ্রিক এডিপির আকার বৃদ্ধির হারের সমানুপাতিক ছিল না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ২৩ শতাংশ কমেছে। আবার ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত সম্পূর্ণ বাজেট ব্যবহার করা যায়নি।