এ মৌসুমের সর্বোচ্চ দূষণ আজ ঢাকায়, নগরীর ৬ এলাকায় মারাত্মক পরিস্থিতি
দেশের বায়ুদূষণ বেশি মাত্রায় শুরু হয় বর্ষার শেষে। পুরো শীতের বা শুকনা মৌসুমে দূষণ পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নেয়। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে বিশ্বের ১২৭ নগরীর মধ্যে ঢাকার অবস্থান চতুর্থ। আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে আইকিউএয়ারে ঢাকার গড় বায়ুমান ছিল ২০৯। বায়ুর এই মানকে খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চলতি বছর শুকনা মৌসুম শুরুর পর বায়ুর মান এতটা খারাপ হয়নি। নগরীর ছয় স্থানে অতিরিক্ত দূষণ আজ।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের অবস্থা নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
বায়ুদূষণে গতকাল শনিবারের মতো আজও শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ৬৮৬। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে পাকিস্তানের লাহোর (স্কোর ৩৪৬) এবং কুয়েতের কুয়েত সিটি (স্কোর ২৫৭)।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বায়ুর মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কোনো কোনো দিন রাজধানীকে ছাপিয়ে যাচ্ছে শহরগুলোর দূষণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ঢাকার বায়ুদূষণ চলতি শুকনা মৌসুমে সর্বোচ্চ। এটা কেবল শুরু। সামনের দিনগুলোয় নতুন নতুন রেকর্ড হবে, তা বলে দেওয়া যায়। এর কারণ হলো, দূষণ রোধে যা করার, তার প্রায় কোনো কিছুই আমরা করিনি বা করছি না শুধু কথা বলা ছাড়া। এখন মানুষকেই সচেতন হতে হবে দূষণ রোধে।’
রাজধানীর ছয় এলাকায় আজ দূষণ পরিস্থিতি অনেক খারাপ। ছয়টি স্থানেরই মান খুবই অস্বাস্থ্যকর। এ ছয় স্থান হলো দক্ষিণ পল্লবী (মান ২২৭), আইসিডিডিআরবি (২২৭), মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং (২২১), বেচারাম দেউড়ী (২১৬), কল্যাণপুর (২১০) ও গুলশানের বে’জ এজ ওয়াটার (২০৪)।
দূষণ রোধে যা করবেন
আজ রাজধানীর বায়ুর যে মান, তাতে অবশ্যই যেকোনো ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে গেলে মাস্ক পরে যেতে হবে। খোলা স্থানে শরীরচর্চা বন্ধ রাখতে হবে। জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
বায়ুদূষণে যত ক্ষতি
বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বাহ্যিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের আয়ু গড়ে সাড়ে পাঁচ বছর কমছে।
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সের (একিউএলআই) ২০২৫ সালের হালনাগাদ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (ইপিআই)। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।