কৃষিতে উদ্ভাবন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত খাদ্যঝুঁকি কমাবে

‘জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, কৃষি উদ্ভাবন ও রিজিলিয়েন্স’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান
ছবি: আরডিআরএসের সৌজন্যে

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যেই আমাদের ভৌত ও পরিবেশগত সম্পদ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সার্বিক সক্ষমতার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ফলে মানুষের জীবন ও জীবিকা, খাদ্য, পানি, সম্পদ, বসতি, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবেশগত অবনতি ঘটছে, খাদ্য নিরাপত্তা কমছে। এতে বাড়ছে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব। একই সঙ্গে বিভিন্ন রোগ ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও বাড়ছে।

বেসরকারি সংগঠন আরডিআরএস আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, কৃষি উদ্ভাবন ও রিজিলিয়েন্স’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর একটি হোটেল গতকাল শনিবার এর আয়োজন হয়। আরডিআরএসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এই সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহের ওপর আলোকপাত করা। সমস্যাটি মোকাবিলায় আরডিআরএসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরাও এর উদ্দেশ্য ছিল। সেমিনারে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অংশ নেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করার সবচেয়ে ভালো কৌশল হলো অংশীদারত্ব। এই ধরনের অনুষ্ঠান ও আলোচনা আমাদের একটি বৃহৎ ছাতার নিচে জড়ো হয়ে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়েন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রজেক্ট লিডার এবং স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী মৃন্ময় গুহ নিয়োগী। তিনি বলেন, কৃষি উদ্ভাবনের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। উচ্চফলনশীল ফসলের প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন দেশকে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। কিন্তু এর জন্য মাঠপর্যায়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দায় উন্নত বিশ্বের, কিন্তু খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তিনি বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকিতে থাকা  দেশগুলোকে ন্যায্য অর্থনৈতিক বণ্টনের আওতায় আনার ওপর জোর দেন।

সেমিনারের অন্যতম আলোচক ছিলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতা, কৃষিতে উদ্ভাবন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করার জন্য আরডিআরএস চমৎকার উদাহরণ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে আছে। তিনি আরডিআরএসকে দক্ষিণাঞ্চলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কাজ সম্প্রসারিত করার অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন পিকেএসএফের পরিচালনা পরিষদের সদস্য মো. আবদুল মুঈদ।

আরডিআরএসের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন। আরডিআরএস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার কর্মকার অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।