আগে পরিবেশ, পরে উন্নয়ন

পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা। আজ শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয়
ছবি: আয়োজকদের কাছ থেকে সংগৃহীত

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পুরোনো গাছ সংরক্ষণ ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন নগর–পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবাদীরা। এটি নাগরিক দায়িত্ব বলে তাঁরা বলেন।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ‘ওয়েস’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ তাগিদ দেন। ‘জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ সংরক্ষণ ও টেকসই নগর–পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের সহ আয়োজক ছিল ‘আরবান প্ল্যানিং স্টুডিও’। ৫ জুন ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস।

আলোচনা সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই পরিবেশকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়, আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত আগে পরিবেশ, পরে উন্নয়ন।’ প্রকৃতির প্রতি সবাইকে সদয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতিকে আপনি সেবা দিন, প্রকৃতি আপনাকে সেবা দেবে।’

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, শিশুদের প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্যের কাছাকাছি আনার অংশ হিসেবে নগর-পরিকল্পনায় প্রকৃতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রাণপ্রকৃতি এবং জীববৈচিত্র্যকে রক্ষায় বৃক্ষ সংরক্ষণে সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম চালাতে হবে।

‘লেক ও গাছ সংরক্ষণ করা নাগরিক দায়িত্ব’ উল্লেখ করে আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, নগর-পরিকল্পনায় সবুজায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে লেক ও গাছ সংরক্ষণ করা নাগরিক দায়িত্ব।

অনুষ্ঠানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, নগর-পরিকল্পনায় সব উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পার্ক এবং সবুজায়ন নিশ্চিত করা। এ জন্যই ড্যাপে জলাধার, গণপরিসর এবং সবুজায়ন তৈরির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইউএনডিপির টাউন ম্যানেজার মো. মারুফ হোসাইন বলেন, ‘নগর এলাকাকে বসবাস উপযোগী করার জন্য নাগরিককে উপেক্ষা করে উন্নয়ন কার্যক্রম করা যাবে না। আমাদের প্রথমে মানবিক শহর গড়ে তুলতে হবে। মানবিক শহর গড়ে তুলতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর–পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, ওয়েসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা আলো এবং পরিচালক লিসান আসিব খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আলোচনার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সবুজ মেলারও (গ্রিন ফেয়ার) আয়োজন করা হয়। এতে ১২ জন বন্য প্রাণিবিষয়ক আলোকচিত্রীর ১২টি ছবি প্রদর্শন করা হয়। এসব ছবির মধ্য দিয়ে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরা হয়।