সাজেকে পাহাড় কাটা রোধে সার্বক্ষণিক তদারকির নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা রোধে সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘সাজেকে পাহাড় কেটে তৈরি হচ্ছে সুইমিংপুল’ শিরোনামে গত ২৯ মার্চ একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে গতকাল সোমবার ওই রিট করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬খ ধারা অনুযায়ী বিনা অনুমতিতে পাহাড় কাটা নিষেধ। আইন না মেনে প্রভাবশালী একটি মহল পাহাড় কেটে ওখানকার প্রকৃতি ধ্বংস করছে বলে প্রতিবেদনে এসেছে। হাইকোর্ট সাজেকে অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা রোধে সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ পাঁচ বিবাদীর প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাজেকে পাহাড় রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগ যুগ্ম সচিবের নিচে নয়, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে পরিবেশসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রুলে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং পাহাড় কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ধ্বংসপ্রাপ্ত পাহাড় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। পরিবেশসচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৮০০ ফুট ওপরে পাহাড় কেটে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘপল্লী রিসোর্ট নির্মাণ করছে সুইমিংপুল। প্রকাশ্যে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে সাজেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে পাহাড়ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুইলুই, হামারি ও কংলাক—এই তিনটি পাড়া নিয়ে সাজেক পর্যটনকেন্দ্র।