শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে আজ

শীত থেকে বাঁচতে টুপি, মাফলার, মাস্ক, এমনকি গামছাও ব্যবহার করছেন কেউ কেউছবি: সোয়েল রানা

দেশের বেশির ভাগ এলাকায় কয়েক দিন ধরেই তীব্র শীত। এর মধ্যে ২২টি জেলায় এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শীত মৌসুমে এর আগে কখনো এ রকম পরিস্থিতি দেখা যায়নি। বিপদের কথা হচ্ছে, আজ মঙ্গলবার দিনের প্রথম ভাগে শৈত্যপ্রবাহ মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় পৌঁছাতে পারে। যার অর্থ, শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ভেতরে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে পুরো রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায়। এর পাশাপাশি একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করছে আরও ছয় জেলা যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর ও কিশোরগঞ্জে। শৈত্যপ্রবাহ আজও থাকবে এবং তাপমাত্রা আরও কমে আসবে। তবে আজ রাতের দিকে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে।

ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার শীত মৌসুমে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল এটি। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হয়েছে। ভোরের দিকে বেশ কুয়াশাও ছিল।

কোনো অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলে সেটিকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দুটি স্থানে— নওগাঁর বদলগাছী ও দিনাজপুরে। এই দুই জায়গাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রথম আলোর নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় জেলায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের মধ্যে খেটে খাওয়া মানুষ বেশি সমস্যায় পড়েছেন। গতকাল সকালে নওগাঁ শহরের বিহারি কলোনি এলাকায় ভ্যানচালক জিয়ারুল আলমের সঙ্গে কথা হয় তাঁর।

জিয়ারুল বলেন, এমন শীতে ঘরের বাইরে বের হতে মন চাইছিল না তাঁর। কিন্তু ঘরে থাকলে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়েই কাজে নেমেছেন তিনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ভেতরে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে পুরো রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা (সর্বনিম্ন) ছিল টাঙ্গাইল; নীলফামারীর সৈয়দপুর ও ডিমলা এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জের নিকলী, রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

আর ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার শীত মৌসুমে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল এটি। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হয়েছে। ভোরের দিকে বেশ কুয়াশাও ছিল। দুপুরের দিকে রোদের দেখা পাওয়া গেলেও তাতে উত্তাপ ছিল না। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, গতকালের মতো আজও ঢাকার দিনের তাপমাত্রা প্রায় একই রকম থাকতে পারে। সারা দেশেও আজ দিনের তাপমাত্রা বাড়বে না।

আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। এর বাইরে দেশের অন্য অঞ্চলের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।

তীব্র শীতের কারণে দেশের কিছু কিছু জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে নাটোর জেলার সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়; নীলফামারীর সৈয়দপুরের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বগুড়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গতকাল বন্ধ ছিল। এসব এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

শীতের তীব্র অনুভূতির মধ্যেই বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। এর বাইরে দেশের অন্য অঞ্চলের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তিনি জানান, বৃষ্টির সময় শীতের তীব্রতা কমে আসবে। তবে বৃষ্টি ও মেঘ কেটে গেলে শীতের তীব্রতা আবার বাড়বে।