বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্টের ৯ দফা নির্দেশনার একটি হলো ঢাকার আশপাশের পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও দুই সিটি করপোরেশনকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এক সম্পূরক আবেদনের শুনানিতে সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। একই সঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ ডিসেম্বর তারিখ রেখেছেন আদালত।

পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দিয়েছিলেন। ৯ দফার মধ্যে ঢাকার আশপাশের পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা, মাত্রার চেয়ে বেশি কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে চলা যান জব্দ ও ধুলাপ্রবণ এলাকায় দুই সিটি করপোরেশনের নিয়মিত পানি ছিটানো রয়েছে।

‘বায়ুদূষণে ঢাকা এখন এক নম্বরে’, ‘বিক্রি হচ্ছে ইটভাটার ছাড়পত্র, বাড়ছে পরিবেশদূষণ’ এবং ‘৮ বছরে ৪৭ দিন নির্মল বায়ু পেয়েছে ঢাকাবাসী’ শিরোনামে চলতি মাসে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী বিল্লাল হোসেন শুনানিতে ছিলেন।

আদালতের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় সম্পূরক আবেদনটি করা হয় বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে কানামাছি খেলা চলছে বলে শুনানিতে বলেছি।

একপর্যায়ে আদালত বলেছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজড করেই ওই ইট ভাটাগুলো চলে। তাদের (কর্মকর্তাদের) নির্মল বায়ুর প্রয়োজন নেই। কারণ, তাদের সন্তানেরা বিদেশে পড়াশোনা করে, সেখানে নির্মল বায়ু পায়। ডেঙ্গুর প্রার্দুভাবে অনেক শিশু মারা গেছে, প্রার্দুভাব কমেনি—সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।’

হাইকোর্টের ৯ দফার মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; সিটি করপোরেশন রাস্তায় পানি ছিটানো; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করার বিষয়গুলো রয়েছে।

আরও পড়ুন