সুন্দরবন রক্ষায় সরকার মনোযোগী নয়

সরকার সুন্দরবন রক্ষায় মনোযোগী নয়। সুন্দরবন অঞ্চলে উন্নয়নের নামে প্রকল্প, কলকারখানা ও স্থাপনার অনুমোদন দিচ্ছে সরকার। পৃথিবীর বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ ধ্বংসে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তও অব্যাহত।

‘সুন্দরবন বিনাসী সব ধরনের অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে’ আজ বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘সুন্দরবন দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার। ‘সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’ উল্লেখ করে নুর মোহাম্মদ বলেন, যতগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছে, সব কটি থেকে দেশকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। সেই সুন্দরবনকে ধ্বংস করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক চক্রান্ত ও পরিকল্পনা হচ্ছে। সরকারের যেসব আইনকানুন আছে, সেসব ব্যবহার করে প্রকৃতি রক্ষা করতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সুন্দরবন ধ্বংসে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও দেশি চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেন বাপার সহসভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, একটি বন ছিল কক্সবাজারের চকরিয়া সুন্দরবন। চিংড়ি চাষের নামে বিশ্বব্যাংকের একটা চক্রান্তের কারণে চকরিয়া সুন্দরবন শেষ। সেখানে এখন চিংড়ি চাষও নেই, চকরিয়া সুন্দরবনও নেই। এখন চলছে সুন্দরবনকে নিয়ে সেই চক্রান্ত।

পরিবেশ সংরক্ষণ করে উন্নত বাংলাদেশ চান মন্তব্য করে শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে। তখন সুন্দরবনের অবস্থা কী দাঁড়াবে? যদি সুন্দরবনকে ধ্বংস করে উন্নত বাংলাদেশ হয়, আমরা সেটা চাই না।’

সুন্দরবন বাংলাদেশের একটি পরিচয়—উল্লেখ করে বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, সরকার সুন্দরবন রক্ষার জন্য মনোযোগী নয়। তারা সেখানে উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংসের প্রকল্প ধারাবাহিকভাবে অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে। কলকারখানা সীমানা চিহ্নিত করছে, কোনোটা ভবন করছে।

সুন্দরবন ধ্বংস করে কোনো ধরনের প্রকল্প না গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বাপার সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির। তিনি বলেন, প্রায় আড়াই শ কলকারখানা এই সুন্দরবনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, নির্বাহী সদস্য হালিম দাদ খান, নির্বাহী সদস্য পারভীন আকতার, জাতীয় কমিটির সদস্য হাজি শেখ আনসার আলী, আজীবন সদস্য নিখিল চন্দ্র ভদ্র, মুজিবুর রহমান প্রমুখ।