কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি—এআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন ২২ জন

কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা এআইপি সম্মাননা-২০২১ পাচ্ছেন ২২ জন। এআইপি নীতিমালা ২০১৯–এর আলোকে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচটি ক্যাটাগরিতে তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচিত ব্যক্তিদের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে বলে আজ শুক্রবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বীকৃত বা সরকারিভাবে নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণিতে তিনজনকে এআইপি নির্বাচিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, পরিবেশবিষয়ক সংগঠক হিসেবে চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন তিলোত্তমার প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও সমবায় উদ্যোক্তা হিসেবে সাতক্ষীরার ধানদিয়া সিআইজি মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি শিখা রানী চক্রবর্তী।

জাত বা প্রযুক্তি উদ্ভাবন শ্রেণিতে নির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিষমুক্ত নিরাপদ সবজির কৃষি উদ্যোক্তা এম এ মতিন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য চুয়াডাঙ্গার জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ।

কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পশ্রেণিতে ১০ জন এআইপি হয়েছেন। তাঁরা হলেন উন্নত জাতের ফল চাষের জন্য টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. ছানোয়ার হোসেন, পেঁয়াজবীজ চাষের জন্য ফরিদপুরের খান বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শাহীদা বেগম, সাথি ফসল উৎপাদন করে জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, ফল চাষের জন্য চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমীন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করায় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অ্যাগ্রো বেজড সোশিও ইকোনমিক্যাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, দুগ্ধ উৎপাদনে পাবনার ঈশ্বরদীর তন্ময় ডেইরি খামারের স্বত্বাধিকারী মো. আমিরুল ইসলাম। মাছ চাষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আল বারাকা মৎস্য খামার অ্যান্ড হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী মাছুদুল হক চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মৌচাষি কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ফলচাষি সিরাজ বহুমুখী খামারের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেরপুর সদর উপজেলার ফলচাষি মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন নার্সারি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. হযরত আলী।

রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণিতে দুজন এআইপির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃক্ষরোপণ ও বনসাই নার্সারির জন্য গাজীপুর সদর উপজেলার লিভিং আর্ট গার্ডেনের পরিচালক কে এম সবুজ ও বারোমাসি আমচাষি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শ্রেণিতে তিনজনকে এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। জৈবসার ও কেঁচোসার উৎপাদক নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অন্নপূর্ণা অ্যাগ্রো সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী রাম নিবাস আগরওয়ালা, বাণিজ্যিক কৃষি খামারি হিসেবে ঢাকার নবাবগঞ্জের অমিত ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মায়া রানী বাউল ও সফল বীজ উৎপাদনকারী পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবদুল খালেক।

এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর মোট পাঁচটি বিভাগে এআইপি সম্মাননা দেওয়া হয়। এআইপি কার্ডের মেয়াদ এক বছর। এআইপিরা সিআইপিদের মতো  সুযোগ–সুবিধা পান। এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রশংসাপত্র, বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশ পাস, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ; বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণকালীন সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার; নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন–সুবিধাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার। এ ছাড়া তাঁরা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা পান।

কৃষি মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) নীতিমালা প্রণয়ন করে। এর আলোকে ২০২০ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে এ সম্মাননা। ২০২০ সালে এআইপি পেয়েছিলেন ১৩ জন।  

আগামী রোববার (৭ জুলাই) সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২১ সালের এআইপি পুরস্কার দেওয়া হবে। এতে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ প্রধান অতিথি এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।