মোন্থার প্রভাবে ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কেন এত দিন ধরে এই ঘূর্ণিঝড় সক্রিয়
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে আছড়ে পরা ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ দুর্বল হয়ে গেলেও এর প্রভাব কমছে না; বরং এর প্রভাবে এবার দেশের তিন বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শুক্রবার অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী দুই দিন (৪৮ ঘণ্টা) এর প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগ অতিক্রম করার পর দূরে এসে এভাবে বৃষ্টি ঝরানোর পেছনে কারণ হলো, আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া আরেক নিম্নচাপ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
যখন কোনো এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়, তবে তাকে ভারী বৃষ্টি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে তাকে বলা হয় অতি ভারী বৃষ্টি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম ৪৮ ঘণ্টার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যে টানা কোথাও ভারী বা অতি ভারী বৃষ্টি হবে, তা নয়। এ সময়ের মধ্যে তিন বিভাগের কোনো স্থানে এ বৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাবেই এই বৃষ্টি।
এদিকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল–সংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে আজ প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। এই চার জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কেন মোন্থা এখনো বৃষ্টি ঝরাচ্ছে
প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোন্থা গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূল অতিক্রম করে। তারপর এটি দ্রুত ঘূর্ণিঝড় এবং দ্রুতই স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের উপকূলে এর প্রভাব তেমন পড়েনি। কিন্তু দুই দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রাজধানীতে ২০ মিলিমিটার, মানকিগঞ্জে ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মোংলা ও যশোরে বৃষ্টি হয় যথাক্রমে ২৮, ২৬, ১৮ ও ১৫ মিলিমিটার।
এরই মধ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা এল। মোন্থার এখনো সক্রিয় থাকার কারণ কী—এ প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, মোন্থা দুর্বল হলেও এটি ভারতের উত্তর ছত্তিশগড়, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় রয়ে গেছে। আর এসব এলাকায় বৃষ্টিও ঝরাচ্ছে। কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড়ের পশ্চিমে চলে যাওয়ার কথা ছিল। চলে গেলে বাংলাদেশের অংশে এভাবে হয়তো পড়ত না। কিন্তু পশ্চিমে যেতে বাধার সৃষ্টি করেছে আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ। ওই নিম্নচাপ মোন্থাকে যেতে বাধা দিয়েছে।
রাজধানীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা কতটুকু
তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা থাকলেও রাজধানীতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। তবে আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। আর বৃষ্টি বেশিক্ষণ ধরেও হবে না।