এক মৌসুমে ৬ দফা বন্যার মুখে সিলেটের গোয়াইনঘাট

পাহাড়ি ঢলে বন্যাকবলিত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে যাতায়াতের সড়ক। ছবিটি আলীরগাঁও এলাকা থেকে শুক্রবার বিকেলে তোলা
প্রথম আলো

পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট ফের বন্যাকবলিত হওয়ার মুখে পড়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে উপজেলার প্রধান সড়কের বেশ কিছু স্থানে পানি উঠেছে। শনিবার সকাল থেকে সারি-গোয়াইন, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের অধিকাংশ স্থানে পানি ওঠায় সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এই নিয়ে এক মৌসুমে ছয় দফা বন্যাকবলিত হওয়ার মুখে পড়েছে গোয়াইনঘাট। শনিবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুস সাকিব প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে। ওই দিন বিকেল থেকে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের সড়কের অন্তত সাতটি স্থানে পানি উঠেছে। সড়ক দিয়ে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।

গোয়াইনঘাটে মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রথম দফা বন্যা হয়েছিল। এরপর জুন মাসে দুই দফা বন্যা হয়। জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে আরও দুই দফা বন্যা শেষে সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ দফা বন্যার মুখে পড়েছে গোয়াইনঘাট। গোয়াইনঘাটের ইউএনও বলেন, গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর, আলীরগাঁও পশ্চিম ও পূর্ব, জাফলং, তোয়াকুল ও নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোর অন্তত ৯ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। জৈন্তাপুর উপজেলা দিয়ে প্রবহমান সীমান্ত নদী সারি ও জাফলংয়ের ডাউকি হয়ে পিয়াইন নদে পাহাড়ি ঢল নেমে পানি বেড়েছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢল নামায় সিলেট অঞ্চলের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সীমান্ত নদ-নদীর পানি বেড়েছে। দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

পানি বাড়ছে সিলেটের সীমান্ত নদ-নদীরও। জৈন্তাপুরের সারি ঘাট পয়েন্টে নদীর পানি ১১ দশমিক ৩৪ মিটার, কানাইঘাটে লোভা নদীর পানি লোভাছড়া পয়েন্টে ১২ দশমিক ৯৩ মিটার এবং ধলাই নদের পানি কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানায়, সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় একটানা ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ঢলের পানি নেমে বাড়ছিল সুরমা ও কুশিয়ারার পানি। শুক্রবার সকাল থেকে সুরমা নদীর উৎসমুখের কানাইঘাট পয়েন্টে ও কুশিয়ারা নদীর উৎসমুখে ভারতের বরাক নদীর মোহনায় পানি বাড়ায় অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বাড়ছিল। শনিবার সকালেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

পাউবো সিলেটের দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যে দেখা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১১ দশমিক ৫২ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি। সুরমার সিলেট শহর পয়েন্টে ৯ দশমিক ৬৩ মিটার প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে শুক্রবার সন্ধ্যায় ১২ দশমিক শূন্য ৫৮ মিটার থেকে বেড়ে শনিবার সকাল ছয়টায় ১২ দশমিক ৯৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। অমলসিদ থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টেও পানি বাড়ছে।

পাহাড়ি ঢলে বন্যাকবলিত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে যাতায়াতের সড়ক। ছবিটি আলীরগাঁও এলাকা থেকে শুক্রবার বিকেলে তোলা
প্রথম আলো

পানি বাড়ছে সিলেটের সীমান্ত নদ-নদীরও। জৈন্তাপুরের সারি ঘাট পয়েন্টে নদীর পানি ১১ দশমিক ৩৪ মিটার, কানাইঘাটে লোভা নদীর পানি লোভাছড়া পয়েন্টে ১২ দশমিক ৯৩ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা ধলাই নদের পানি কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।