জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়াবে ধনী দেশগুলো, বাড়বে ‘তাপমাত্রা’

বিশ্বে কয়লা উৎপাদন সামান্য পরিমাণ কমলেও বাড়বে তেল ও গ্যাস উত্তোলনফাইল ছবি: রয়টার্স

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে ধনী দেশগুলোর পরিকল্পনা বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিরাপদ পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থাটি বলছে, আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়াসহ ১৫টি উন্নত দেশ তেল ও গ্যাসের উত্তোলন দ্বিগুণের বেশি বাড়াবে। এতে করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) ‘প্রোডাকশন গ্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

আগামী সপ্তাহে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ ব্যাপক মাত্রায় কমানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এ অবস্থায় ইউএনইপির প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী এক দশকে কয়লা উৎপাদন সামান্য পরিমাণ কমলেও বাড়বে তেল ও গ্যাস উত্তোলন। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে এবারের প্রতিবেদনে পাওয়া চিত্রের পার্থক্য সামান্যই বলে জানিয়েছে ইউএনইপি।
জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) গবেষকেরা চলতি বছরের শুরুর দিকে সতর্ক করে বলেছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির বেশি বাড়লে তা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এ জন্য ২০১০ সালের তুলনায় ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে।

এ অবস্থায় কার্বন নিঃসরণ কমানোয় জোর দেওয়া দরকার হলেও বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াচ্ছে বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রোডাকশন গ্যাপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫টি দেশ আগের তুলনায় প্রায় ১১০ শতাংশ বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে। এ তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব ও অস্ট্রেলিয়া।
কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া দেশের সংখ্যা বাড়লেও এ ব্যাপারে তেল, গ্যাস ও কয়লা উৎপাদনকারী বৃহৎ দেশগুলোর সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই।

সমীক্ষা অনুযায়ী, কয়লার ব্যবহার কমলেও আগামী ২০ বছরের বেশি সময় গ্যাসের ব্যবহার বাড়বে, যা প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।