তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৫ গ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী

উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো
উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো

উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আজবৃহস্পতিবার নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি, জলঢাকা উপজেলার, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত প্রায় ১৫টি গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা জানান, বুধবার দিবাগত রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা নদী আশপাশের গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের বৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও, বিকেল ৩টায় বিপৎসীমা অতিক্রম ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে (৫২দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার) প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় ওই সূত্রটি। ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার দিবাগত রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের পুর্ব ছাতনাই ও ঝাড়শিংহেরশ্বর গ্রামের ৮০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে শুরু করেছে।
ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইউনিয়নের উত্তরখড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, দক্ষিণ খড়িবাড়ি গ্রাম ও চরখড়িবাড়ি গ্রামের আংশিক এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পরিবারগুলো আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিনুর রহমান বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি ও ছাতুনামা মৌজার প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন আজ সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিকেল তিনটায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারেজের সব কয়টি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।