ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে

গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আজ বুধবার বিকেল তিনটায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ফরিদপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে চারটি সড়ক ও ৩০ হেক্টর ফসলি জমি। ১৫টি গ্রামের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরভদ্রাসন উপজেলায় ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে গতকাল মঙ্গলবার। ওই দিন সকল ৬টায় নদীর পানি বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই পয়েন্টে আরও ছয় সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বর্তমানে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, গতবার বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পেঁয়াজ, ধনিয়া ও মাশকালাই রোপণ করেছিলেন কৃষক। পানি বৃদ্ধির ফলে ২২ একর পেঁয়াজ, ২০ একর ধনিয়া ও ৩৫ একর মাশকালাইসহ মোট ৭৭ একর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের দুই হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের কায়মুদ্দিন মাতুব্বরের কান্দি গ্রামে একটি কার্পেটিং সড়ক এবং ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও বোরহান মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে তিনটি ইট বিছানো সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, হঠাৎ করে পদ্মা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফরিদপুরের চর এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। ফসলি জমির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাশকালাইয়ের। ইতিমধ্যে ৩০ হেক্টর জমির মাশকালাই নিমজ্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, পাশাপাশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও ধনিয়ারও ক্ষতি হয়েছে। তার ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্যা সিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ছবুল্যা সিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে ভাঙন কবলিত জায়গা থেকে ওই বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪৭ মিটারে নেমে এসেছে। গত সোমবার ভাঙন থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব ছিল ৫৩ মিটার।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, নতুন করে গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পদ্মা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করে। আজ বিকেল ৩টার দিকে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারত অংশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় ওই পানি বাংলাদেশে পদ্মা অববাহিকা দিয়ে গড়িয়ে যাওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে।