বাহারি ফুলে রঙিন নার্সারি

গাজীপুরের টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মীরের বাজার এলাকা। এখানে পথের ধারে একটি ছোট্ট নার্সারিতে ফুটেছে নানান রঙের ফুল। মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে সেই রঙের ঝলকানি। লাল, হলুদ, বেগুনি, গোলাপি, ডালিয়া, ডায়ানথাস, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদাসহ বাহারি সব ফুল। এসব ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে পুরো নার্সারি।
এবার শীত জেঁকে বসতেই নতুন এক রূপ ধারণ করেছে গাজীপুর নগরে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা নার্সারিগুলো। পথের ধারে, বাসার ছাদে কিংবা বারান্দায় গড়ে ওঠা ছোট-বড় নার্সারিগুলো সেজেছে নতুন সাজে। রঙিন হয়ে উঠেছে শীতের সব ফুল। সঙ্গে রাখা হয়েছে পেয়ারা, লেবু, কমলা, পেঁপেসহ নানা প্রজাতির ফলের চারা। বাসাবাড়ি বা অফিসের কাজে ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে কিনছেন পছন্দের চারা। বর্ষাকালে ফল, আর শীতকালে ফুলের চাহিদা বেশি থাকায় ক্রেতাদের ভিড় এখন একটু বেশিই।
বড়দিন উদ্যাপন উপলক্ষে গত মঙ্গলবার সকালে নগরের মীরের বাজারের ‘মায়ের দোয়া’ নামক একটি নার্সারিতে চারা কিনতে এসেছিলেন টঙ্গী পাগাড় এলাকার বাসিন্দা শীতল পিউরিফিকেশন। প্রায় ২০ মিনিট পুরো নার্সারি ঘুরেফিরে পছন্দ করেন ফুলের চারা। কেনেন সাতটি গোলাপ, দুটি কসমস, পাঁচটি সিলভিয়া, দশটি গাঁদা, চারটি ডায়ানথাসসহ বেশ কিছু ফুল ও সবজির চারা। শীতল পিউরিফিকেশন বলেন, ‘বড়দিনে বাড়িতে বিভিন্ন জায়গার লোকজন আসবে। তাই বাড়ি সাজানোর অংশ হিসেবে তাড়াহুড়া করে এসব ফুলের চারা কিনতে এসেছি। এ ছাড়া বাড়ির ছাদ ও বারান্দার জন্য সারা বছরই বিভিন্ন গাছের চারা কেনা হয়, তবে শীতে বেশি কেনা পড়ে ফুলের চারা।’
মায়ের দোয়া নার্সারির পাশেই রয়েছে আরও দুটি নার্সারি। শীত উপলক্ষে এই নার্সারিগুলোতেও রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির শীতের ফুল, ফল ও সবজির চারা। সরেজমিনে দেখা যায়, পলিব্যাগ ও ছোট-বড় টবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুল, ফল ও শীতের সবজির চারা। এর মধ্যে ফুলের চারাগুলোর সবগুলোতে ফুল ফুটেছে। ফলের চারাগুলোর কয়েকটিতে ধরেছে পেঁপে, পেয়ারা। আর সবজির চারাগুলোর মধ্যে বেগুন, টমেটো রাখা হয়েছে সারি করে। নার্সারিতে থাকা কর্মীরা চারাগুলোতে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে কোনো কোনো টবে চলছে নতুন মাটি ভরার কাজ। এর মধ্যেই চলছে বিকিকিনি।
এ সময় কথা হয় নার্সারিতে থাকা কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে। তাঁরা জানালেন, শীতে ফুলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলে ডালিয়া, সিলভিয়া, কসমস, ডায়ানথাস, পিঁটুনিয়া ও গাঁদা ফুলের চারা। সবজি ও ফলের মধ্যে রয়েছে লেবু, পেঁপে, বেগুন, আমড়া, পেয়ারা ও টমেটোর চাহিদা।
সার্বিক বিষয়ে কথা হলে অপূর্ব রোজ গার্ডেনের মালিক আবির হোসেন বলেন, ‘শীতকালে নার্সারিগুলোতে ফুলের চাহিদা বেশি। এ কারণে আমরাও চেষ্টা করি সব ধরনের ফুলের চারা রাখতে। কারণ, এ সময়টাতে বেচাকেনা একটু জমে ওঠে।’ তিনি বলেন, নগরের মীরের বাজার ছাড়াও টঙ্গী স্টেশন রোড, জয়দেবপুর, কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় নার্সারি আছে। নার্সারিগুলোতে এসব মৌসুমি ফুলের চাহিদা প্রচুর।