বৃষ্টি হতে পারে, তারপর আবার শৈত্যপ্রবাহ

শীতে জবুথবু অবস্থা। পণ্যবাহী যানের ওপর ঠান্ডা বাতাসের মধ্য দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। গতকাল সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে।  ছবি: প্রথম আলো
শীতে জবুথবু অবস্থা। পণ্যবাহী যানের ওপর ঠান্ডা বাতাসের মধ্য দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। গতকাল সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে। ছবি: প্রথম আলো
>আগামী রোববার থেকে তাপমাত্রা আবারও কমতে শুরু করবে। আরেক দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে, চলবে তিন-চার দিন।

টানা ছয় দিন পর অবশেষে সূর্যের দেখা মিলল। শৈত্যপ্রবাহের পর গতকাল সোমবার দুপুরে কিছুটা উত্তাপের নাগাল পেল রাজধানীবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশ থেকে শৈত্যপ্রবাহ বিদায় নিয়েছে। আজ মঙ্গলবারও দেশের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা বাড়তে পারে। অর্থাৎ শীত আরও কমবে। তবে কাল বুধবার থেকে দেশের বেশির ভাগ স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। থেমে থেমে ওই বৃষ্টি শনিবার পর্যন্ত চলতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টি শুরুর আগে ও চলাকালে দেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে কুয়াশা সরে যাবে। তাপমাত্রা বেড়ে ও কুয়াশা কমে রাজধানীসহ বেশির ভাগ বড় শহরের বায়ুর মান কিছুটা হলেও ভালো হবে। তবে বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ আগামী রোববার থেকে তাপমাত্রা আবারও কমতে শুরু করবে। আরেক দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। শীতের ওই ধাক্কা তিন থেকে পাঁচ দিন চলতে পারে।

বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে একটি জরুরি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। মাঠে থাকা বোরো ধানের বীজতলা, সবজি ও সরিষাখেতে রাতের বেলা হালকা সেচ দিয়ে সকালে সেই পানি সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জমিতে যাতে কোনো কুয়াশা ও পানি জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। বৃষ্টির সময় ফসলের বীজগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হলে কোনো ফসল না কাটার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থা দুটি।

জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর রোববার থেকে আরেক দফা তাপমাত্রা কমে শীত বাড়তে পারে। শুষ্ক পশ্চিমা লঘুচাপ ও জলীয় বাষ্পপূর্ণ পুবালি বায়ুর মিশ্রণের ফলে ওই বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তিনি বলেন, বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর যে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে, তাতে কুয়াশা কম থাকতে পারে।

বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, টানা ১০ দিন পর রাজধানীর বায়ুর মানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এত দিন বেশির ভাগ সময় রাজধানীর বায়ুর মানের সূচক ছিল ২০০–এর বেশি, অর্থাৎ খুবই অস্বাস্থ্যকর। গতকাল সকাল থেকে বায়ুর মানের সূচক ২০০–এর নিচে নেমে আসে। বিকেল সোয়া চারটায় ওই সূচক ছিল ১৮০, অর্থাৎ অস্বাস্থ্যকর। আর বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার স্থান চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ স্থানে নেমে আসে।

গতকাল রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। তবে রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সীতাকুণ্ডে, ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে, ২৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বেশির ভাগ স্থানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজ মঙ্গলবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ দেশের বেশির ভাগ স্থানে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে।