পরশু থেকে বাড়তে পারে বৃষ্টি

রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি। জনজীবনের চলাচলে ভোগান্তি। নাজিরা বাজার, ঢাকা, ৫ জুন
ছবি: দীপু মালাকার

বর্ষাকালে দেশের আকাশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অবস্থান করে, যার প্রভাবে হয় বৃষ্টি। আগামী সোমবার এই বায়ু দেশের আকাশে প্রবেশ করবে, এ কারণে বাড়বে বৃষ্টি। যদিও বর্ষার ঝুম বৃষ্টি পেতে অপেক্ষা করতে হবে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বর্তমানে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন উপকূলে অবস্থান করছে। আগামী দু–তিন দিনের মধ্যে তা বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূলে আসতে পারে। ৭ জুনের পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকবে দেশের দক্ষিণাংশে।

মো. শাহীনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তারপর তা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রাজশাহী পার হলে আমরা বলি মৌসুমি বায়ু অতিক্রম করেছে। বায়ু শক্তিশালী হলে বৃষ্টিপাতও বেশি হবে।’

মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি প্রথম বাড়বে দক্ষিণাংশে—বরিশাল, খুলনা এবং চট্টগ্রামে। পাশাপাশি একই সময়ে বাড়বে ময়মনসিংহ ও সিলেটেও। এরপর সেই বায়ু দেশের মাঝামাঝি চলে আসতে পারে, যা ধীরে ধীরে দেশের উত্তর দিক দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে।

রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি। জনজীবনের চলাচলে ভোগান্তি। নাজিরা বাজার, ঢাকা, ৫ জুন
ছবি: দীপু মালাকার

মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘টেকনাফে এলে এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো দেশ কাভার (ছেয়ে যাবে) করবে।’

ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পশ্চিম এ মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ পার হয়ে ভারতের মাঝামাঝি একটা স্থানে গিয়ে আটকে থাকে এবং তিন থেকে চার মাস অবস্থান করে সরে যায়। তত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ-ভারত অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয় বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।

যদিও পুরোপুরি বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতে মাসের মাঝামাঝি লেগে যাবে।
আবহাওয়াবিদেরা বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে হালকা বৃষ্টিকে বলেন ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’। বর্তমানে চলছে সেই সময়, যেখানে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে দেশে এখন মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে।

রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি। জনজীবনের চলাচলে ভোগান্তি। নাজিরা বাজার, ঢাকা, ৫ জুন
ছবি: দীপু মালাকার

তারই ধারাবাহিকতায় আজও ঢাকায় ভোরের দিকে বৃষ্টি হয়েছে। তবে দুপুরের দিকে এসে পুরো আকাশ মেঘে ছেয়ে যায়, রূপ নেয় সন্ধ্যার।

গত রাতে বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীতে। তবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে, ১০৪ মিলিমিটার। ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে নেত্রকোনায় ২০ মিলিমিটার ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে হয়েছে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

খুব একটা বৃষ্টি হয়নি রংপুর ও বরিশালে। একেবারেই বৃষ্টি হয়নি খুলনায়।
আগামীকাল রোববার সকাল ছয়টা পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু–এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও ‘মাঝারি ধরনের ভারী’ থেকে ‘ভারী বর্ষণ’ হতে পারে।

রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি। জনজীবনের চলাচলে ভোগান্তি। নাজিরা বাজার, ঢাকা, ৫ জুন
ছবি: দীপু মালাকার

এ ছাড়া রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং এটি কিছু এলাকায় কমতে পারে।

পাশাপাশি সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।