হাকালুকি হাওরে হাঁস-পাখি নিধনের দায়ে দুজনকে কারাদণ্ড

হাওরে ‘বিষটোপ’ ছিটিয়ে পরিযায়ী পাখি নিধন করা হয়। ওই বিষটোপ খেয়ে পাখির পাশাপাশি হাঁসও মারা পড়ে। আবার জালের ফাঁদ তৈরি করে শিকারিরা পাখি নিধন করে। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাকালুকি হাওরে হাঁস ও পাখি নিধনে জড়িত থাকার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল বুধবার রাতে দুজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের বাসিন্দা গণি মিয়ার দেশীয় প্রজাতির হাঁসের একটি খামার আছে। ওই খামারে দেড় হাজার হাঁস ছিল। শাহপুরের পাশ ঘেঁষে হাকালুকি হাওর পড়েছে। প্রতিদিন হাঁসগুলো হাওরের বিভিন্ন জলাশয়ে খাবারের খোঁজে যায়। এ ছাড়া বছরের এই সময়টায় বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির সমাবেশ ঘটে হাওরে। এই সুযোগে পাখিশিকারিরা তৎপর হয়ে ওঠেন। তাঁরা রাতে সেদ্ধ ধানের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে ‘বিষটোপ’ তৈরি করে হাওরের বিলের কাছে ছিটিয়ে রাখেন। ভোরে খাবারের সন্ধানে ঝাঁক বেঁধে আসা পাখিরা খাবার ভেবে ‘বিষটোপ’ খেয়ে মারা যায়। এসব পাখি আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় চড়া দামে বিক্রি হয়।

৩০ নভেম্বর বিকেলের দিকে ১০২টি হাঁস ও কিছু পরিযায়ী পাখিকে বিলে মৃত অবস্থায় ভাসতে দেখেন গণি মিয়া। গতকাল বুধবার বিকেলের দিকে একই স্থানে তাঁর খামারের আরও ৩৫টি হাঁস ও ১০-১২টি পরিযায়ী পাখিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পান তিনি। এ সময় বিলের কাছে সন্দেহজনক অবস্থায় তিনি পাঁচ ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। একপর্যায়ে জসিম মিয়া (২৫) ও শরিফ মিয়া (১৮) নামের দুজনকে আটক করে ফেলেন। তাঁদের কাছে পাখি শিকারের কাজে ব্যবহৃত জাল পাওয়া যায়। বাকি তিনজন পালিয়ে যান।

এই দুজনকে শাহগঞ্জ বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে রাত নয়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান রুহুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। আটক জসিম ও শরিফ পাখি নিধনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে মৌলভীবাজারের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।