কঠিন সময় পার করছি, সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বুধবার সকালে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪তম, ১২৫তম এবং ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাছবি: বাসস

মহামারির অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশ এখন অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অবস্থায় সবার প্রতি কৃচ্ছ্রসাধনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার সকালে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪তম, ১২৫তম এবং ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে আমদানি করা সব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আমি জানি উন্নত দেশগুলোর অবস্থা। এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ডসহ প্রতিটি দেশ এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না, খাদ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। সেখানে সব জায়গায় রেশনিং করে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি!’

এই পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বহু আগে থেকেই এটা বলে যাচ্ছি, এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে। কারণ, আমাদের নিজের খাদ্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্য আমাদের শিল্পায়ন দরকার। দেশের মানুষের খাদ্য এবং পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। কাজেই সেই অবস্থায় আমরা যদি নিজেরা দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়। সে জন্য আমাদের সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। কৃচ্ছ্রসাধন করেই আমাদের চেষ্টা করতে হবে।’

এ সময় নবীন বিসিএস কর্মকর্তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের যাঁরা নবীন অফিসার, তাঁদের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তিনি যখন কোনো এলাকায় কাজ করেন, তখন সেই এলাকার উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখার সুযোগ পান।’ তিনি বলেন, কোথাও কাজে নিযুক্ত হলে বিভিন্নজন বিভিন্ন দেনদরবার নিয়ে আসবে, তবে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে হবে।

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই আজকের নবীন কর্মকর্তারা যখন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে যাবেন, তখন এই বিষয়ের দিকেই লক্ষ রাখবেন, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলেন, সেখানেই তৃপ্তি। যতটুকু দিয়ে আসতে পারবেন, সেটাই মানুষ মনে রাখবে।’
সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে কোনো বাঙালি একমাত্র কর্নেল ছাড়া সচিব, জেনারেল ও মেজর জেনারেল হতে পারতেন না। তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা সবকিছুই হতে পারছি। সে কথা মনে রেখেই সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্রত নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সশরীর উপস্থিত থেকে ৩টি ব্যাচের ১০৩ জন কর্মকর্তার হাতে সনদ তুলে দেন এবং ফটোসেশনে অংশ নেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে ১২৪, ১২৫ ও ১২৬তম ব্যাচে শীর্ষ স্থান অর্জন করে রেক্টরস পদক লাভকারী তানিয়া তাবাসসুম, মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও ফারহানা নাসরিন নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।