যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এই ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীছবি: ভারতীয় নৌবাহিনীর এক্স পোস্ট থেকে নেওয়া

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সহায়তায় যুদ্ধজাহাজ এবং একটি দূরবর্তী টহল জাহাজ (এলআরএমপি) মোতায়েন করেছে ভারতের নৌবাহিনী।

আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত কাছাকাছি এলাকায় থেকে নজর রাখে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ।

মোজাম্বিক থেকে ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বেলা দেড়টায় ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজে থাকা সব নাবিকই বাংলাদেশি। জিম্মি করার তৃতীয় দিনের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা একটার দিকে প্রথমে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে জিম্মি জাহাজটি নোঙর করেছিল দস্যুরা। এরপর সন্ধ্যার দিকে উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখে। আজ জাহাজটি আবারও নোঙর তুলে কাছাকাছি আরেক এলাকায় নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, দস্যুরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করছে।  

ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে দূরবর্তী টহল জাহাজ (এলআরএমপি) মোতায়েন করা হয়। এরপর ১২ মার্চ সন্ধ্যায় জাহাজটির অবস্থান শনাক্ত করার পর জাহাজের নাবিকদের অবস্থা জানতে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু জাহাজ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তাদের পোস্টে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় পরে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। সেটি ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় কাজ করছিল। যুদ্ধজাহাজটি ১৪ মার্চ সকালে ছিনতাইকৃত জাহাজটির গতিপথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করে ভারতীয় নৌবাহিনীর এই যুদ্ধজাহাজ।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলদস্যুদের আক্রমণের প্রেক্ষাপটে গেল দুই মাসে ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে সহায়তা জোরদার করেছে ভারতের নৌবাহিনী। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে ইরানের পতাকাবাহী একটি মাছ ধরার জাহাজে জলদস্যুদের আক্রমণের চেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়। ওই জাহাজে ইরানের ১১ এবং পাকিস্তানের ৮ জন নাগরিক ছিলেন।

এর আগে জানুয়ারিতে সোমালিয়ার পূর্ব উপকূলে ইরানের পতাকাবাহী আরেকটি মাছ ধরার জাহাজে জলদস্যুরা হামলা করার পর ১৯ পাকিস্তানি নাবিককে উদ্ধার করেছিল ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুমিত্রা। এ ছাড়া গত ৫ জানুয়ারি উত্তর আরব সাগরে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি লিলা নোরফোক ছিনতাইয়ের চেষ্টাও নস্যাৎ করে ভারতীয় নৌবাহিনী।