‘এতগুলো লাশ আমি কেমনে বহন করব’

যশোর সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একটি ইজিবাইক দুমড়েমুচড়ে যা্য় । গতকাল সন্ধ্যায় যশোর-মাগুরা মহাসড়কের লেবুতলা এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

‘আমার মেয়ে মহিমা ও রাহিমা খাতুনসহ পাঁচজন মারা গেল। এটা মেনে নেব কীভাবে? এতগুলো লাশ আমি কেমনে বহন করব?’ যশোর সদর হাসপাতালে দাঁড়িয়ে আহাজারি করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন সত্তরোর্ধ্ব সদর উদ্দীন। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি।

যশোর সদর উপজেলার লেবুতলার তেঁতুলতলা এলাকায় যশোর-মাগুরা মহাসড়কে একটি বাস ইজিবাইককে ধাক্কা দেয়। ইজিবাইকটি আবার একটি মোটরসাইকেলের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে ইজিবাইকে থাকা সদর উদ্দীনের পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ মোট সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উদ্দীনের পরিবারের সদস্যরা হলেন তাঁর দুই মেয়ে বাঘারপাড়া উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মহিমা খাতুন (৪৮) ও রহিমা খাতুন (৩০), রহিমা খাতুনের মেয়ে জেবা (৬), মহিমা খাতুনের নাতি হাসান (৩) ও হোসেন (৩)।

বাসের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালক পান্তাপাড়া গ্রামের ইমরান (২৫) হোসেনেরও মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনার কবলে পড়া মোটরসাইকেলের আরোহীও প্রাণে বাঁচেননি। তবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। সবার মরদেহ যশোর সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

এই দুর্ঘটনায় সদর উদ্দীনের পরিবারের আরও দুই সদস্য আহত হয়েছে। তারা হলো নিহত শিশু হাসান ও হোসেনের বোন খাদিজা খাতুন (৫) এবং তাদের মা সোনিয়া খাতুন (৩০)। যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর রশীদ বলেছেন, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সোনিয়াকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সদর উদ্দীন জানান, তাঁর নাতি সোনিয়ার মেয়ে খাদিজার টনসিলের সমস্যা দেখা দেয়। এ জন্য তাকে ডাক্তার দেখাতে যশোর শহরে যাচ্ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। পথে তাদের বহনকারী ইজিবাইককে বাস ধাক্কা দেয়।

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান যশোর জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নিহত ব্যক্তিদের দাফন ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয় বহনে জেলা প্রশাসন পাশে থাকবে। এ নিয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।  
আরও পড়ুন: মহাসড়কে ইজিবাইককে বাসের ধাক্কা, তিন শিশুসহ সাতজন নিহত

আরও পড়ুন