ঢাবি অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের জামিন আবেদন নাকচ

বাংলাদেশের সংবিধান হাতে আদালতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জনছবি: প্রথম আলো

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের (কার্জন) জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ রোববার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন।

আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের জামিন চাওয়া হয়। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করেছেন।

গত শুক্রবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), সাংবাদিক মনজুরুল আলমসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক হাসান গত শুক্রবার আদালতে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, গতকাল বেলা ১১টার সময় দায়িত্ব পালনকালে জানতে পারি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে কিছু লোককে ঘেরাও করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলে স্লোগান দিচ্ছে। তখন দেখতে পাই, একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের জন্য “মঞ্চ ৭১” নামের একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে।’

পুলিশ কর্মকর্তা তৌফিক হাসান বলেন, ‘মাননীয় আদালত, উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী “মঞ্চ ৭১”–কে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করেছেন।’

গত বৃহস্পতিবার সকালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্যরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিতে যান। ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।

আলোচনা সভায় প্রথমে বক্তব্য দেন শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।’

শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। একপর্যায়ে তাঁরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল এলে তাঁরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মনজুরুল আলমসহ অন্তত ১৬ জনকে তুলে দেন। রাত পৌনে একটার দিকে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

আরও পড়ুন