নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে ১৫ শতাংশ

সড়ক দুর্ঘটনা
প্রতীকী ছবি

গত নভেম্বর মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৯ জন। নভেম্বরে যত দুর্ঘটনা হয়েছে, তার মধ্যে ৪২ শতাংশই মোটরসাইকেলে। গত অক্টোবর মাসের চেয়ে নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। আজ রোববার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নভেম্বর মাসের দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে তারা।

সংগঠনটি জানিয়েছে, নভেম্বরে ৪৬৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫৪ জন নিহত ও ৭৪৭ জন আহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৭৮ জন ও শিশু ৭১টি। এর মধ্যে ৪১ শতাংশই মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী। এ ছাড়া ১২৩ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। গত অক্টোবরে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮২ জন নিহত হয়েছিলেন।

নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে এর মধ্যে ৭৮ জন শিক্ষার্থী। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন সাড়ে ৮০ শতাংশ।

নভেম্বরে দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ২৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার ১৬ শতাংশ ও বাস সাড়ে ১২ শতাংশ। জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি (সাড়ে ৪১ শতাংশ)। এরপর ১৬ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে ও গ্রামীণ সড়কে ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৪২টি দুর্ঘটনায় ১৭৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। সবচেয়ে কম সিলেটে ১৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। জেলা হিসেবে ময়মনসিংহে সবচেয়ে বেশি ২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠি, লালমনিরহাট ও রাঙামাটি জেলায়। রাজধানীতে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

রোড সেফটির প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। এর মধ্যে কিশোর-যুবকদের বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো, চালকদের অদক্ষতা ও অস্থিরতা, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির শিথিলতা এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি অন্যতম।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে রোড সেফটির প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’–এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়ানো, গণপরিবহন উন্নত করা, সড়ক ও মহাসড়কে সড়ক বিভাজক নির্মাণ করা এবং বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো অন্যতম।