আধেয় (কনটেন্ট) সরাতে বিশ্বের শীর্ষ সার্চ ইঞ্জিন গুগলের কাছে গত বছরের শেষ ছয় মাসে বাংলাদেশ সরকার যত অনুরোধ করেছে, তার ৫২ শতাংশই সরকারের সমালোচনা-সংক্রান্ত। এরপর আছে মানহানিবিষয়ক আধেয় সরানোর অনুরোধ। সবচেয়ে বেশি ছিল ইউটিউবের ভিডিও সরানোর অনুরোধ। গুগল এই ছয় মাসে সরকারের অনুরোধের ৫৮ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
মার্কিন বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল সম্প্রতি ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের স্বচ্ছতা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সরকারগুলো কী ধরনের আধেয় সরিয়ে নিতে আবেদন করেছে, কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার চিত্র রয়েছে এই প্রতিবেদন। সরকারের অনুরোধ বলতে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া অনুরোধের কথা বোঝানো হয়েছে। গুগল বলছে, সরকারি সংস্থাগুলো স্থানীয় আইন লঙ্ঘনের দায়ে এবং আদালতের আদেশে আধেয় সরানোর অনুরোধ করে থাকে। গুগল এ ক্ষেত্রে নিজস্ব নির্দেশিকা ও নীতি লঙ্ঘন করে কি না, তা পর্যালোচনা করে থাকে।
গুগলের স্বচ্ছতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সরকার ৫৯১টি অনুরোধ করে। এর মাধ্যমে ২ হাজার ৯৪৩টি আধেয় সরানোর অনুরোধ করা হয়, যার মধ্যে ৫২ শতাংশ অনুরোধ ছিল সরকারের সমালোচনা-সংক্রান্ত।
৫৯১টি অনুরোধের মধ্যে ৫৮০টি ছিল ইউটিউব থেকে আধেয় সরানোর। মোট অনুরোধের মধ্যে সরকারের সমালোচনামূলক ছিল ৩১০টি। ১৭৫টি ছিল মানহানিসংক্রান্ত।
কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় বাংলাদেশের আদালত থেকে ৯টি, সরকারের অফিশিয়ালরা ৩টি, তথ্য ও যোগাযোগ কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ৮৮৮টি, পুলিশ ২৪টি ও অন্যান্য দিক থেকে ১৯টি আধেয় সরানোর অনুরোধ করা হয়।
গুগলের স্বচ্ছতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে গুগল কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে যথেষ্ট তথ্য ছিল না। প্রায় ১১ শতাংশ ক্ষেত্রে আধেয় আগেই সরিয়ে ফেলা হয়। প্রায় ৮ শতাংশের ক্ষেত্রে নীতি অনুযায়ী সরানো হয়েছে।
গুগলের ২০২৩ সালের জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর মাসের স্বচ্ছতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশ সরকার মোট ৫ হাজার ৬৬৭টি আধেয় সরানোর অনুরোধ করে।
আধেয় সরানোর বিষয়ে গুগলের কাছে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ ২০২১ সাল থেকে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। প্রতিবারই সরকারের সমালোচনা ও মানহানি-সংক্রান্ত আধেয় সরানোর অনুরোধ সবচেয়ে বেশি থাকতে দেখা গেছে।
গুগলের ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবা ইউটিউব থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪৪০টি ভিডিও সরানো হয়েছে। দুই বছর ধরে ভিডিও সরানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় থাকছে।