'দুশ্চিন্তা হতো, ফোন না এলে আরও ভয় লাগত'
‘এবার আমাদের ঈদ বলে কিছু ছিল না। সত্যিকারের ঈদের দিন আজ। জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঈদের আনন্দ দ্রুত ফিরিয়ে দিয়েছে।’
জিম্মি করার ৩২ দিন পর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিকের মুক্তির খবরে এভাবেই প্রথম আলোকে মনের কথা জানিয়েছেন মোহাম্মদ নুর উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। মুক্ত ২৩ নাবিকের একজন মোহাম্মদ নুর উদ্দিন।
জান্নাতুল ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩২টি দিন কীভাবে কেটেছে জানি না। আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে ঈদের আনন্দের দিন ছিল বিষাদে ভরা। আজ যেন আমাদের খুশির ঈদ। কেএসআরএম গ্রুপের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তারা তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করেছে।’
সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ২৩ নাবিকসহ ছেড়ে দিয়েছে দস্যুরা। মুক্তিপণের অর্থ পাওয়ার পর সোমালিয়ার সময় শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিটে) দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। এরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ জাহাজটি পাহারা দিয়ে সোমালিয়ার উপকূল ত্যাগ করতে থাকে। গত ১২ মার্চ জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি করেছিল দস্যুরা।
আরেক নাবিক আইয়ুব খানের ভাই আওরঙ্গজেব রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় এক মাস আমাদের বিষাদের দিন কেটেছে। আজ মনে হচ্ছে সত্যিকারের ঈদ এসেছে। আমরা খুবই খুশি।’
জিম্মি হওয়ার পর এমভি আবদুল্লাহর নাবিক আইনুল হকের মা লুৎফে আরা বেগম ছেলের জন্য চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তির খবর শুনে ভালো লাগছে।’
জাহাজটির ডেক ক্যাডেট মো. সাব্বির হোসেনের বাবা হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব সময় দুশ্চিন্তা হতো। ফোন না এলে আরও ভয় লাগত। যাক, শেষ পর্যন্ত নাবিকেরা মুক্ত হয়েছে। এর চেয়ে খুশির খবর আর কী হতে পারে?’