শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের মুখে বুয়েটে টার্ম ফাইনাল স্থগিত
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ধারাবাহিকভাবে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে টার্ম ফাইনালের বাকি পরীক্ষাগুলো স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কাউন্সিল। শনিবার সন্ধ্যায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের টানা ১৩ দিনের ছুটি শেষে গত বুধবার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বুয়েটে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ২১ ও ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেন। ঈদের আগে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৮, ২০ ও ২২ ব্যাচের প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন।
গত ২৪ মার্চ থেকে বুয়েটের সব ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। এর মধ্যে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষা হয়। ঈদের ছুটি শেষে বুধবার থেকে আবার পরীক্ষা শুরু হয়। আগামী ৮ মে পর্যন্ত পরীক্ষা চলার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা বর্জন করছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা থেকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
জানতে চাইলে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের নতুন পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, সামনে যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে। এসব পরীক্ষার নতুন তারিখ এবং বর্জন করা পরীক্ষাগুলোর পুনর্নির্ধারিত তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
২৭ মার্চ মধ্যরাতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রবেশ করেন। একে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ হোসেনকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
১ এপ্রিল উচ্চ আদালতের এক রায়ের পর বুয়েটে আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ৪ এপ্রিল থেকে বুয়েটে ছুটি শুরু হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ছাত্ররাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাস চান। এ জন্য তাঁদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস রক্ষায় বুয়েট কর্তৃপক্ষকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করার আহ্বান জানান তিনি।