যানজটে তদন্তকারী কর্মকর্তা, আবারও পেছাল আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যার সাক্ষ্য গ্রহণ

নিহত ফারুক আহমেদফাইল ছবি

তদন্ত কর্মকর্তা যানজটে আটকে পড়েছিলেন। সময়মতো আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাই আজ রোববারও হয়নি টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সর্বশেষ সাক্ষী তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ। এ নিয়ে ১৬ বারের মতো পেছাল চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ।

টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান আগামী ২২ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ অবসরে গেছেন। তিনি গাইবান্ধায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন। রোববার ভোরে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু পথে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, বঙ্গবন্ধু সেতুসহ বিভিন্ন স্থানে যানজটে আটকা পড়েন। এ জন্য তিনি সময়মতো আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাই তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। তবে তিনি বিলম্বে আদালতে আসার পরও তাঁর হাজিরা দেওয়া হয়েছে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম খান জানান, কারাগারে থাকা সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ওরফে রানা হজ¦পালনের জন্য সৌদি আরবে থাকায় উপস্থিত ছিলেন না। কারাগারে থাকা তাঁর ছোট ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তির জামিনের জন্য তাঁর আইনজীবীরা আবেদন জানান। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন

অশোক কুমার সিংহ জানান, যানজটে আটকে পড়ার খবর তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের জানিয়েছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি আদালতে হাজিরা দেন। কিন্তু তার আগেই মামলাটির কার্যক্রম শেষ হয়। তিনি জানান, এর আগে চারবার তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালতে হাজির হয়েছিলেন, কিন্তু আসামি অসুস্থ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন

২০১৪ সালে এই মামলায় জড়িত থাকা সন্দেহে আনিছুল ইসলাম ওরফে রাজা এবং মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁদের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যা মামলার সঙ্গে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ওরফে কাকন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি সানিয়াত খান ওরফে বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে।

তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান, তাঁর তিন ভাইসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর মধ্য দিয়েই বিচারকাজ শুরু হয়।

আরও পড়ুন