প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়: শশী থারুর
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমানে কংগ্রেস–দলীয় লোকসভার সদস্য শশী থারুর।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গতকাল শনিবার দেওয়া এক পোস্টে এ উদ্বেগের কথা জানান শশী থারুর।
পোস্টে শশী থারুর লেখেন, ‘বাংলাদেশের খবরাখবর নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়; বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং একটি বহুমাত্রিক সমাজের ভিত্তির ওপর চরম আঘাত। আমি সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম ও অন্যান্য সাহসী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অশুভ সংকেত বলে মন্তব্য করেন শশী থারুর।
শশী থারুর বলেন, একই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাঝুঁকির মুখে খুলনা ও রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করতে বাধ্য হওয়া একটি বড় বিপত্তি। এ অচলাবস্থা সরাসরি শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ পরিবারগুলোকে চরম সংকটে ফেলেছে, যারা আন্তসীমান্ত যাতায়াত স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছিল।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অশুভ সংকেত বলে মন্তব্য করেন শশী থারুর।
শশী থারুর লেখেন, একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য অন্তর্বতী সরকারকে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই নিশ্চিত করা প্রয়োজন:
সাংবাদিকদের সুরক্ষা: সাংবাদিকদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা উচিত নয়, যেখানে তাঁদের জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বার্তা দিতে হয়, আর সেই সময় তাঁদের কার্যালয় জ্বলতে থাকে। সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না।
ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাঝুঁকির মুখে খুলনা ও রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করতে বাধ্য হওয়া একটি বড় বিপত্তি। এ অচলাবস্থা সরাসরি শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ পরিবারগুলোকে চরম সংকটে ফেলেছে, যারা আন্তসীমান্ত যাতায়াত স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছিল।
কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা: জনগণের মধ্যকার পারস্পরিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে অবশ্যই নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে সুরক্ষা দিতে হবে। আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে অবশ্যই বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
শান্তি ফিরিয়ে আনা: ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে এ উত্তরণকাল অতিক্রম করতে হলে নিয়ন্ত্রণহীন জনতার শাসনের বদলে গঠনমূলক সংলাপের পথ বেছে নিতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে।
সাংবাদিকদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা উচিত নয়, যেখানে তাঁদের জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বার্তা দিতে হয়, আর সেই সময় তাঁদের কার্যালয় জ্বলতে থাকে। সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না।
পোস্টে শশী থারুর লেখেন, ‘বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রত্যাশা করি, শান্তি ফিরে আসুক ও এমন এক নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হোক, যেখানে জনগণের কণ্ঠস্বর কোনো সহিংসতা বা হুমকির মধ্য দিয়ে নয়; বরং ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে।’