জাহাঙ্গীর আলম
ফাইল ছবি

সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও শাখা তাঁকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মন্ত্রণালয়, দুদক ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা বানোয়াট, কাল্পনিক কাহিনি।’

আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের অভিযোগে গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। গত বুধবার তলবি নোটিশে জাহাঙ্গীর আলমকে ২০ ও ২১ মে সকাল ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, ‘সরকার আমাকে একটি প্রকল্পের জন্য ৭০০ কোটি টাকা ও আরেকটি প্রকল্পের জন্য ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। মাত্র দুটি প্রকল্প থেকে রাস্তার কাজের জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা রাস্তার বরাদ্দ দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছিল। যেখানে বরাদ্দই ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা, সেখানে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের কাল্পনিক অভিযোগ করা হয়েছে।’

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সেটা কীভাবে তদন্ত করছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আরও পড়ুন

হামলার অভিযোগ নিয়ে আজমত উল্লা খান বললেন, জাহাঙ্গীর নাটকের মাস্টার

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তিন বছরের মাথায় ঢাকা থেকে একটি অবৈধ চিঠি দিয়ে আমার মেয়র পদ খারিজ করা হয়েছিল। আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তিন বছর সরকারি সম্মানী, অফিশিয়াল খরচ, গাড়ির তেলের খরচ ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে গ্রহণ করিনি। আমি বিনা অর্থে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেবা দিয়েছি।’

গত বছরের জুন মাসে গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। একই সঙ্গে দুই সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়।

২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। দল থেকে বহিষ্কারের ৭ দিন পর ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরপর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ তাঁকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুন

স্থায়ী বহিষ্কার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন জাহাঙ্গীর আলম

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দল মনোনয়ন দেয় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে। দলের ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে মেয়র পদে প্রার্থী হলেও যাচাই-বাছাইয়ে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তবে তাঁর মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। মায়ের পক্ষে নির্বাচনের মাঠে নামা জাহাঙ্গীরকে ১৫ মে আওয়ামী লীগ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।