তফসিল ঘোষণার পর অনিয়ম হলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা: সিইসি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ছবি: প্রথম আলো

রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর কোথাও অনিয়ম দেখা গেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে সিইসি এ কথা বলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রথমবারের মতো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেছে নির্বাচন কমিশন। সংলাপের প্রথম ধাপে উপস্থিত রয়েছেন ছয়টি দলের প্রতিনিধিরা। দলগুলোর সঙ্গে ১১টি আলোচ্য নিয়ে আলোচনা করছে কমিশন।

এ সময় সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে খেলবে। ইসি নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকা পালন করতে চায়। কিন্তু খেলোয়াড়েরা সহযোগিতা না করলে কমিশন নিরপেক্ষতা হারাবে। পুরো নির্বাচনপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

নির্বাচন কমিশন পোস্টার নিষিদ্ধ করলেও ঢাকা শহর এখনো পোস্টারে ছেয়ে আছে—এমন প্রশ্নের জবাবে এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘ইসি পোস্টার নিষিদ্ধ করার পরও শহরের যে চিত্র, তা অনভিপ্রেত। পোস্টারগুলো যদি দলগুলো নিজেরা সরিয়ে ফেলে, এটা হবে সবচেয়ে ভদ্র আচরণ। আচরণবিধি ভঙ্গের ক্ষেত্রে কমিশন কোনোভাবেই ছাড় দেবে না।’

বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন চাপে রয়েছে বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতি ও বিশেষ সরকারের অধীন নির্বাচন করতে গিয়ে কমিশনের ওপর নানা ধরনের চাপ আসছে। এসব চাপের কারণে নির্বাচনে অংশীজনদের কাছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি।

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিইসি এই অপব্যবহারকে একটি ‘মুসিবত’ (বড় বিপদ) হিসেবে উল্লেখ করেন।

আজ আলোচনার জন্য সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সংলাপে ডাকা হয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ চলছে। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: ইসির সৌজন্যে

বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ডাকা হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে (বিএনএম)।

আরও পড়ুন

ইসির সঙ্গে আজ রাজনৈতিক দলগুলোর যে ১১টি বিষয়ে আলোচনা হবে-

১. তফসিল ঘোষণার আগে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয়।
২. তফসিল ঘোষণার পর আচরণবিধি প্রতিপালন।
৩. আচরণবিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন।
৪. প্রার্থীদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন।
৫. পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসী ভোট বাস্তবায়ন।
৬. তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা।
৭. ভুল তথ্য ও অপতথ্য প্রতিরোধ করা।
৮. নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
৯. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ না করা। লিঙ্গ, বর্ণ ও ধর্ম নিয়ে কোনো বৈষম্য না করা।
১০. ধর্মীয় উপসনালয়কে রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যবহার না করা।
১১. এআই সম্পাদিত ভিডিও দিয়ে প্রতিপক্ষ, লিঙ্গ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করা।

আরও পড়ুন