হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭: ডিবি

ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখায় আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়
ছবি: ডিবির সৌজন্যে

ঢাকা-১৭ আসনে ভোট চলাকালে সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলায় জড়িত অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

আজ মঙ্গলবার ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলেছে, গ্রেপ্তার সাতজন হলেন সানোয়ার কাজী (২৮), বিপ্লব হোসেন (৩১), মেহেদী (২৭), মোজাহিদ ( ২৭), আশিক (২৪), হৃদয় (২৪) ও সৈয়দ মোল্লা (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনের একেবারে শেষ পর্যায়ে বিচ্ছিন্ন একটা ঘটনা ঘটেছে ৷ ৩ থেকে ৪ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি কিছু নাম পেয়েছি , তাঁদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন

জড়িতরা যে রাজনৈতিক দলের হোক না কেন, ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি। এক দলের ব্যাজ ধারণ করা লোকজনের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষ ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করছি।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ হিরো আলমের অফিসে গেছে। তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছে মামলা করার জন্য। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই তিনি অফিস ছেড়ে চলে গেছেন।

আরও পড়ুন

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে হিরো আলম বনানীর বিদ্যানিকেতন স্কুল কেন্দ্রে ৫০ থেকে ৬০ জনকে নিয়ে পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে দিনের বেলায় যখন কথা হয়েছে, তখন তিনি বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে।  পরের তিনটার দিকে অনেক লোক নিয়ে আবারও তিনি বিদ্যানিকেতন স্কুলের কেন্দ্রে যান। আমরা সিসিটিভি ফুটেছে দেখছি হিরো আলম কাউকে মারতে উদ্যত হচ্ছেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’

এদিকে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, হিরো আলমের লোকজন থানায় আসছেন। তাঁরা মামলা দিলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

ঢাকার গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট হয়েছে গতকাল। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত (মোহাম্মদ এ আরাফাত)। তিনি এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন। এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপরীতে কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বগুড়ার ছেলে আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমই পরিচিত ছিলেন। মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে সারা দেশে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠা হিরো আলম গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেখানে মহাজোটের প্রার্থী জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি।

আরও পড়ুন

গতকাল ঢাকা-১৭ আসনের ভোট গ্রহণ চলাকালে বেলা সোয়া তিনটার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান হিরো আলম। এ সময় নৌকা প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকেরা পেছন থেকে তাঁর উদ্দেশে গালাগাল করতে থাকেন এবং কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে রেখে স্কুলের ফটকের দিকে নিয়ে যান।

ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে ধাওয়া দিয়ে বাইরে আনার পরে রাস্তায় ফেলে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমকে পেটান নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা।