আ.লীগসহ ১৩ দলের কাছ থেকে সাড়া পায়নি ইসি

নির্বাচন কমিশন ভবন
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় শর্তগুলো মেনে চলছে কি না, সে তথ্য চেয়ে ৩৯টি দলকে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২৩টি দল ইসিকে সে তথ্য সরবরাহ করেছে। বিএনপিসহ তিনটি দল এসব তথ্য দিতে ইসির কাছে অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বাকি ১৩টি দলের কাছ থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ইসি সচিবালয় কোনো জবাব পায়নি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত সেপ্টেম্বরে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তাতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলো বিধিবিধানের আলোকে পরিচালিত হচ্ছে কি না, দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কি না, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ইসি সূত্র জানায়, ইসিতে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের কাছ থেকে এ–সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে গত ১৩ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়। তাদের ৩০ কার্যদিবসের (২৪ নভেম্বর) মধ্যে এসব তথ্য দিতে বলা হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার সে সময় শেষ হয়।

ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করেছে সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, এনপিপি, তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বিএনএফ, মুক্তিজোট, গণফোরাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), এলডিপিসহ ২৩টি নির্ধারিত সময়ে ইসিকে তথ্য দিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, ইসির চাওয়া তথ্য দিতে বিএনপি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) আরও তিন মাস সময় চেয়ে আবেদন করেছে। বাকিদের কোনো তথ্য বা আবেদন নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন পর্যন্ত হাতে পায়নি ইসি সচিবালয়।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা ২৬টি দলের কাছ থেকে জবাব পেয়েছেন। এর বাইরে হয়তো কেউ কেউ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর আবেদন দিয়ে থাকতে পারেন। আগামী রোববার এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে নথি তোলা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম আইনে যুক্ত করা হয়। কোনো দল ইসিতে নিবন্ধিত না হলে দলীয়ভাবে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না। এ নিবন্ধন পেতে আইনে নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে হয়। আবার নিবন্ধন পাওয়ার পর নির্ধারিত কিছু শর্ত পালন করার বিধান আছে। এগুলো না মানলে ইসি ওই দলের নিবন্ধন বাতিল করে দিতে পারে।

ইসির কর্মপরিকল্পনায় বলা আছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইসি এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করবে। কিন্তু সেটি করা যায়নি। এ কাজে কর্মপরিকল্পনার চেয়ে ইতিমধ্যে দুই মাস পিছিয়ে পড়েছে ইসি। দলগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য সরবরাহ করার জন্য সময় আবার বাড়ানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করলে কোনো দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। সেগুলো হলো ১. বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসনে জয়। ২. যেকোনো একটি আসনে দলীয় প্রার্থী মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ ভোট পাওয়া ৩. কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কার্যালয় এবং অন্তত ১০০টি উপজেলায় কার্যালয় এবং প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তত ২০০ জন ভোটারের তালিকাভুক্তি থাকতে হবে।

আরও পড়ুন