দুর্ঘটনায় পঙ্গু মানুষের পাশে কি দাঁড়াবে রাষ্ট্র

দুর্ঘটনায় পঙ্গু ব্যক্তিদের কারও পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে, কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, কেউ হারিয়েছেন চাকরি। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পঙ্গু হওয়ায় চরম আর্থিক কষ্টে পড়েছে পরিবার। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাস। সম্প্রতি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ঠাকুরদীঘি এলাকায়
ফাইল ছবি

চলতি বছরের ২২ এপ্রিল। ঈদের দিন সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মো. রাফিম। কুমিল্লা বিশ্বরোড এলাকায় উল্টো পথে আসা একটি প্রাইভেট কার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে রাস্তায় ছিটকে পড়ে তাঁর কোমরের হাড় ভেঙে যায়। এখনো তাঁকে হুইলচেয়ারে চলতে হয়। বন্ধ হয়ে গেছে তাঁর পড়াশোনা।

ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাফিমের মা–বাবা। মা শাহিদা আক্তার প্রথম আলোকে বললেন, ‘পাঁচ মাস ধরে ছেলের চিকিৎসা চলছে। এ পর্যন্ত সাত লাখ টাকা খরচ করেছি। চলাফেরা করতে না পারায় তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ঘটনায় ছেলের ভবিষ্যৎ এবং আমার পরিবারের সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেছে।’

ছেলের কথা বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন শাহিদা। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ নার্স। তিনি বলেন, ‘উল্টো পথে এসে ধাক্কা দেওয়া প্রাইভেট কার ও মালিককে আজও শনাক্ত করা যায়নি। এ কারণে আইনি পদক্ষেপও নিতে পারিনি।’

‘চার মাসে ছয় লাখ টাকা খরচ করেছি। চিকিৎসকেরা বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু বিদেশে চিকিৎসা করতে অন্তত ১০ লাখ টাকা দরকার। এত টাকা কোথায় পাব।’
মকুল বেগম, হৃদয়ের মা

রাফিমের মতো দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের কারও পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে, কেউ চাকরি হারিয়েছেন, কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পঙ্গু হওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পরিবারগুলো। অর্থের অভাবে সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে, চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে বৃদ্ধ মা–বাবার। পঙ্গু ব্যক্তিটির চিকিৎসার খরচ মেটাতে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। নিরুপায় হয়ে পঙ্গু ব্যক্তিদের কেউ কেউ ভিক্ষা করছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এমন ২০ ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপে উঠে এসেছে এমন চিত্র।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের কতজন পঙ্গু বা প্রতিবন্ধী হয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তার কোনো হিসাব নেই। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে ৩ হাজার ৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৩১৭ জন নিহত ও ৫ হাজার ১৭২ জন আহত হয়েছেন। আর পুলিশের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশে ৫ হাজার ৮৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৬৩৬ জন নিহত এবং ৪ হাজার ৪৪৪ জন আহত হয়েছেন। ২০২১ সালে ৫ হাজার ৪৭২টি দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৮৪ জন নিহত এবং ৪ হাজার ৭১৩ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা পরবর্তী সময়ে কী ধরনের সামাজিক ও আর্থিক সংকটে পড়েন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় তার একটি চিত্র উঠে এসেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়া ১৫ ব্যক্তিকে ধরে ‘ভিকটিমস অব রোড ট্রাফিক অ্যাক্সিডেন্ট ইন গ্রেটার ঢাকা, আ স্টাডি অন দ্য লাইভলিহুড প্যাটার্ন অব দ্য সারভাইভারস’ শিরোনামে একটি গবেষণা করেন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম।

আরও পড়ুন

গবেষণার তথ্য বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তি যেমন সরাসরি ভুক্তভোগী হচ্ছেন, তেমনি পরোক্ষভাবে তাঁদের পরিবার ভুক্তভোগী হচ্ছে। একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি দুর্ঘটনায় পঙ্গু হলে তাঁর উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়।

তখন পরিবার তাঁকে বোঝা মনে করে। একমাত্র মা ছাড়া কাউকে পাশে পান না পঙ্গু ব্যক্তি। স্বামী পঙ্গু হলে স্ত্রী সময় দেন না। ছেলেমেয়েরা পরিচয় দিতে চান না। তাঁর মতামতকে উপেক্ষা করা হয়।

গবেষণায় আরও বলা হয়, দুর্ঘটনার ওপর যৌতুকেরও প্রভাব রয়েছে। কোনো নারী বিয়ের আগে দুর্ঘটনায় আহত হলে বিপুল অঙ্কের টাকা যৌতুক দিয়ে তাঁকে বিয়ে দিতে হয়।

পঙ্গু হয়ে বন্ধ পড়াশোনা

চলতি বছরের শুরুর দিকে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে টঙ্গীতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় মো. জাকির হোসেন। এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তির অপেক্ষায় ছিল সে। এখন সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসাধীন। তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে।

জাকিরের চিকিৎসার খরচ জোগাতে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে তার বড় ভাই মাহবুব রহমানের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ ভাইবোনের বড় সংসার। বাবা ও বড় ভাইয়ের চাকরি থেকে মাসে ১০ হাজার টাকাও আয় হয় না। অথচ জাকিরের চিকিৎসায় ইতিমধ্যে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বেশির ভাগ টাকাই ধারদেনা করা। তাই আর্থিক সংকটে আমাকেও লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’

রাফিম ও জাকিরের মতো আরও পাঁচ শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদেরও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, পড়াশোনা শেষে যাঁরা সংসারের হাল ধরতেন, দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তাঁরা এখন পরিবারের বোঝা। আবার পঙ্গু ব্যক্তিদের কেউ কেউ নানা প্রতিবন্ধকতা ঠেলে পড়াশোনা শেষ করেও চাকরি পাচ্ছেন না।

তাঁর ভাইয়ের দুই ছেলেই ছোট। তাই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এত দিন ব্যবসায় সঞ্চিত টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে। এখন জমি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ ও সংসার চালাতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে আর কত দিন চলবে। দুর্ঘটনার কারণে তাঁর ভাইয়ের সচ্ছল পরিবারটি আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
মো. ফয়জুল্লাহ, গিয়াসের বড় ভাই

দিশাহারা পরিবার

গত মে মাসে একটি গরুবাহী ট্রাকে ঝালকাঠি থেকে ফরিদপুরে আসছিলেন হৃদয় হাওলাদার। ফরিদপুরের ভাঙা এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে ট্রাকটি একটি পুকুরে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান হৃদয়।

হৃদয়ের বাবা হাই হাওলাদার কৃষিকাজ করেন। ভাই গিয়াস হাওলাদারের টাকায় কোনোমতে চলে তাঁদের সংসার। অর্থের অভাবে চিকিৎসাই বন্ধ করে দিয়েছে হৃদয়ের পরিবার।

হৃদয়ের মা মকুল বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার মাসে ছয় লাখ টাকা খরচ করেছি। চিকিৎসকেরা বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু বিদেশে চিকিৎসা করতে অন্তত ১০ লাখ টাকা দরকার। এত টাকা কোথায় পাব।’

মকুল বেগম বলেন, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। গত মে মাসে হৃদয়ের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল। এর সপ্তাহখানেক আগে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।

ছেলে বিদেশে যেতে না পারলেও যে টাকা জমা দিয়েছেন, তা ফেরত পাননি। এনজিওর ঋণ পরিশোধ ও ছেলের চিকিৎসার খরচ নিয়ে তাঁর পরিবার দিশাহারা। অর্থের অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না, সেটা মা হয়ে কীভাবে মনকে বোঝাবেন।

পোশাক কারখানায় কাজ করতেন নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ এলাকার কাজী শাকিন। কোনোমতে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। মাস ছয়েক আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে পেছন থেকে একটি বাস ধাক্কা দিলে সড়কের পাশের খাদে পড়েন শাকিনসহ সিএনজির যাত্রীরা। গুরুতর আহত হন শাকিন। এখনো তাঁর চার হাত-পা অচল।

শাকিন বলেন, এখন বাবা ও ছোট ভাই তাঁর সংসার চালাচ্ছেন। তাঁর চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবার।

স্ত্রী-সন্তানদের কাছেও অবহেলিত

সাভারে একটি পোশাক কারখানায় ভালো বেতনে চাকরি করতেন সুমন মিয়া (ছদ্মনাম)। তাঁর উপার্জনে চলত ছোট ভাইবোনের লেখাপড়া ও বৃদ্ধ মা–বাবার চিকিৎসা খরচ। এক বছর আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে অটোরিকশাকে বাস ধাক্কা দিলে তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। চিকিৎসায় প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ করেছেন। এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ নন।

সুমন প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই তাঁর চাকরি চলে যায়। নিজের জমানো টাকা ও জমি বেচে এত দিন চিকিৎসার খরচ চলেছে। পরিবার আর তাঁকে টানতে পারছে না।

আক্ষেপের সুরে সুমন বলেন, ‘যখন চাকরি ছিল, তখন পরিবারে আমার কদর ছিল। পরিবারের যেকোনো সিদ্ধান্তে আমার মতামত নেওয়া হতো। এখন পরিবার আমাকে বোঝা মনে করে। কিছু খেতে মন চাইলেও কাউকে বলার সাহস হয় না।’

আরও পড়ুন

এমন আক্ষেপ সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু অনেকের। দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্বের শিকার পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের কেউ চাকরি হারিয়েছেন, কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁরা বলছেন, দুর্ঘটনার আগের এবং বর্তমান জীবনের আকাশ-পাতাল পার্থক্য। মা ছাড়া কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। স্ত্রী-সন্তানেরা এখন কথা শোনেন না।

গবেষণার তথ্য বলছে, দুর্ঘটনায় শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সমাজ নেতিবাচক আচরণ করে। সমাজের কেউ তাঁর সঙ্গে মিশতে চায় না। সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাঁদের নেওয়া হয় না। এমনকি পঙ্গু ব্যক্তির সন্তানেরাও বাবার পরিচয় দিতে চান না।

গবেষণায় আরও বলা হয়, পঙ্গু হওয়ার কারণে অনেককে স্ত্রীও ছেড়ে চলে গেছেন। সন্তানেরা মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

দুর্ঘটনায় বাড়ছে দারিদ্র্য

চার মাস আগে দুর্ঘটনার শিকার হন নোয়াখালীর গিয়াস উদ্দিন। স্থানীয় বাজারে সারের ব্যবসা ছিল তাঁর। ব্যবসার আয়ে চলত সংসার, তিন সন্তানের লেখাপড়া। দুর্ঘটনার পর তাঁর শরীরের কয়েকটি হাড় ভেঙে গেছে। মাথায়ও আঘাত পেয়েছিলেন। এখনো সাভারের সিআরপিতে তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেন না তিনি।

গিয়াসের বড় ভাই মো. ফয়জুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাইয়ের দুই ছেলেই ছোট। তাই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এত দিন ব্যবসায় সঞ্চিত টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে। এখন জমি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ ও সংসার চালাতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে আর কত দিন চলবে। দুর্ঘটনার কারণে তাঁর ভাইয়ের সচ্ছল পরিবারটি আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

গবেষণার তথ্য বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা একজনকে শুধু শারীরিকভাবে নয়, আর্থিকভাবেও পঙ্গু করে দেয়। একসময় চাকরি করতেন, এমন ব্যক্তিও নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করছেন, এমন ঘটনাও আছে।

প্রাইভেট কার চালিয়ে সংসার চালাতেন তরুণ মো. আলমাস শিকদার। দুই বছর আগে রাজশাহীতে যাওয়ার পথে টাঙ্গাইল মহাসড়কে তিনি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর এক হাত ও এক পায়ের অংশ কেটে ফেলতে হয়।

আলমাস এখন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাসে বাসে ভিক্ষা করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসা করতে জমি যতটুকু ছিল, বিক্রি করেছি। এখন কোনো কাজ করতে পারি না। তাই নিরুপায় হয়ে ভিক্ষা করছি।’

দরকার পুনর্বাসন ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু ব্যক্তিদের বোঝা ভাবা যাবে না। বরং সক্ষমতা অনুযায়ী তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে তাঁদের আয়ের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু দেশে দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে খুব বেশি উদ্যোগ নেই।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে পাঁচ লাখ ও পঙ্গু ব্যক্তিকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার যে বিধি যুক্ত করা হয়েছে, সেটা পর্যাপ্ত নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলছিলেন, দুর্ঘটনায় পঙ্গু ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী নানা কাজে যুক্ত করতে হবে। তাঁদের আর্থিক অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু ব্যক্তিদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার বলে মনে করেন আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, অনেকে ভালো কম্পিউটার জানেন। হয়তো দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ের ক্ষতি হয়েছে, দুই হাত দিয়ে কম্পিউটার চালাতে পারবেন। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা কেউ তাঁকে চাকরি দিতে চান না। তাই সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে পঙ্গুদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।