মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের এক-তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেলের আরোহী: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

গত মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের এক-তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেলের আরোহী। মার্চ মাসের সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ বুধবার বিকেলে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে দুর্ঘটনার প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ মাসে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০৩ জনই মোটরসাইকেলের আরোহী ছিলেন। যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহত ব্যক্তির ৩৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৪ জন নারী ও ৬৩ জন শিশু। এ ছাড়া ৭৮ জন পথচারীর পাশাপাশি ১৩০ জন বিভিন্ন যানবাহনের চালক নিহত হয়েছেন। নিহত অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে পরিবহন শ্রমিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, মার্চে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ হাজার ২২৮ জন। এ ছাড়া গত মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত এবং নৌপথের সাতটি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়া, ১৭ দশমিক ২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে হয়েছে। বাকি দুর্ঘটনা হয়েছে অন্যান্য কারণে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনার ৭টি কারণ পর্যবেক্ষণ করেছে। উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ; নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম-দুর্নীতি বৃদ্ধি; মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যান বেড়ে যাওয়া এবং মহাসড়কে অবাধে চলাচল; সড়ক-মহাসড়কে সড়ক নির্দেশক (সাইন বা মার্কিং) সড়ক নির্মাণে ত্রুটি; ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং অদক্ষ চালকের গাড়ি চালানো।

এসব দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আটটি সুপারিশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য সংরক্ষণ চালু, স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা তৈরি, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট যান আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের পাশাপাশি চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করা।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এই তথ্য দেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র নয়। এটি কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য। দেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ গণমাধ্যমে স্থান পায় না।