ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদন
বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শক্তিশালী করা জরুরি
বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকাটা নির্ভরশীল বলে ভারত বছরের পর বছর মনে করে আসছে। এমন অবস্থান বাংলাদেশের রাজনীতি এবং দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উভয় ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সামনে যদি বিএনপি সরকার গঠন করে, তবে উভয় পক্ষেরই উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সম্পর্ককে একটি স্থিতিশীল অবস্থানে নিয়ে আসা। তবে নয়াদিল্লির উচিত হবে এর চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের সব পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করা।
ব্রাসেলসভিত্তিক অলাভজনক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের বিষয়ে তাদের বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এমনটাই বলেছে। ‘সোনালি অধ্যায়’ শেষে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ককে আবার সঠিক পথে ফেরানো’ শীর্ষক ৫১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি গতকাল মঙ্গলবার আইসিজি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের ঐতিহাসিক দিকগুলো তুলে ধরে এ ক্ষেত্রে নতুন কী আছে, কেন তা গুরুত্বপূর্ণ এবং ভবিষ্যতের স্বার্থে কী করা উচিত—এ তিন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। আইসিজি বলেছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের ফলে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তবে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন এ সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানোর একটি সুযোগ এনে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে ভোট পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ভারতবিরোধী মনোভাবকে ব্যবহার করার প্রবণতা পরিহার করতে হবে। আর বাংলাদেশে নির্বাচনের পর নয়াদিল্লির উচিত হবে নতুন সরকারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিনিময়ে ঢাকার নতুন সরকারকেও ভারতের নিরাপত্তা–উদ্বেগের বিষয়গুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, বাংলাদেশে নির্বাচনের পর নয়াদিল্লির উচিত হবে নতুন সরকারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বিনিময়ে ঢাকার নতুন সরকারকেও ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
আইসিজি বলেছে, শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লির অকুণ্ঠ সমর্থন বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের ভারতবিরোধী মনোভাবকে উসকে দিয়েছিল, যা গত বছরের গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁর পতনে ভূমিকা রাখে। হাসিনা-পরবর্তী যুগে যদি সম্পর্ক আরও খারাপ হয়, তবে তা সম্ভাব্য সহিংসতা উসকে দিতে পারে, দেশ দুটির অভিন্ন সীমান্তকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ভারতবিরোধী মনোভাব উসকে দেওয়া থেকে বিরত থাকা, অন্যদিকে নয়াদিল্লির উচিত নতুন করে উত্তেজনা বাড়ানো এবং বাংলাদেশে তাদের সম্ভাব্য অংশীদারদের অবমূল্যায়ন করা থেকে দূরে থাকা।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নয়াদিল্লির মূল ক্ষোভ ব্যক্তি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি। এ ছাড়া রয়েছে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইউনূসের দীর্ঘ সময়ের সুসম্পর্ক এবং ভারতবিরোধী বক্তব্য। দূরত্ব বাড়ে ইউনূস-মোদি বৈঠকের জন্য বারবার ঢাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যানে। নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশিদের ভিসা স্থগিতও ক্ষোভ বাড়ায় জনমনে। আন্তসীমান্ত ট্রেন সংযোগ স্থগিত করায় দুই দেশের বাণিজ্য এবং জনগণের সম্পর্কে ভাটা পড়েছে।
ভারতীয় সাবেক এক কূটনীতিককে উদ্ধৃত করে আইসিজির প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা–যুগের অবসানের পর বাংলাদেশের প্রতি কী প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিল ভারত। নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথা বললেও শক্তি দেখানোর পক্ষে ছিল দিল্লির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। চেষ্টা ছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা ক্ষুণ্ন করারও।
প্রথা ভেঙে অধ্যাপক ইউনূসের চীন সফরও দিল্লির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যমের ক্রমাগত অপতথ্য দূরত্ব বাড়ায় দুই দেশের।
২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ভারতের জন্য ছিল একটি বড় ধাক্কা। কারণ, হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে ভারত ছিল তাঁর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মিত্র। নয়াদিল্লির সমর্থন আওয়ামী লীগকে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের বৈতরণি পেরোতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু ক্রমেই অজনপ্রিয় হতে থাকা একজন শাসকের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাবকে আরও উসকে দেয়। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর বিষয়টি ভারতের জন্য প্রতিকূলতা তৈরি করে। এর পর থেকে উভয় দেশই সম্পর্ক বিনির্মাণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। উল্টো একে অপরের উদ্দেশে আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অভিন্ন সীমান্তে সংঘাতের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে।
আইসিজি বলেছে, শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লির অকুণ্ঠ সমর্থন বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের ভারতবিরোধী মনোভাবকে উসকে দিয়েছিল, যা গত বছরের গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁর পতনে ভূমিকা রাখে। হাসিনা-পরবর্তী যুগে যদি সম্পর্ক আরও খারাপ হয়, তবে তা সম্ভাব্য সহিংসতা উসকে দিতে পারে, দেশ দুটির অভিন্ন সীমান্তকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নয়াদিল্লি সম্ভবত ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না, তবে ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন এ সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানোর একটি সুযোগ দিচ্ছে। এ সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে নয়াদিল্লির উচিত নির্বাচনের পরে সহযোগিতার মনোভাব প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়া এবং যাদের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে, তাদেরসহ রাজনৈতিক অংশীজনদের সঙ্গে বিস্তৃত পর্যায়ে যোগাযোগ জোরদার করা। অন্যদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভারতবিরোধী বক্তব্য পরিহার করা।
যদিও ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং দেশ দুটির মধ্যে গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে; তবু সীমান্ত বিরোধ, নিরাপত্তাঝুঁকি, ভারতের আধিপত্যবাদী আচরণ নিয়ে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রায়ই টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয় এমন এক সুযোগ এনে দিয়েছিল, যাকে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়াদিল্লি ‘সোনালি অধ্যায়’ বা ‘স্বর্ণ যুগ’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে। উভয় পক্ষ স্থল ও সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি করে এবং শুল্ক হ্রাস, একাধিক ট্রানশিপমেন্ট চুক্তি ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সংহতি ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি পর্যটক ও রোগী চিকিৎসার জন্য ভারত সফর শুরু করেন।
কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এ ধারণা প্রবল ছিল যে হাসিনার একনায়কতান্ত্রিক সরকারকে টিকিয়ে রাখার বিনিময়ে ভারত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে একতরফা সুবিধা নিচ্ছে। হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে বাংলাদেশের জোরালো অবস্থান সত্ত্বেও ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছেড়ে পালানোর পর তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত এ তিক্ততা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
হাসিনার বিদায়ের পর থেকে নয়াদিল্লি ও ঢাকা একে অপরকে দোষারোপ করার বৃত্তে আটকে পড়েছে। উভয় পক্ষই দাবি করছে যে তারা সম্পর্ক মেরামতের জন্য হাত বাড়িয়েছে, কিন্তু অন্য পক্ষ থেকে সাড়া পায়নি। উল্টো একে অপরের বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ তুলেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উভয়পক্ষ সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান নেয়, যা বাণিজ্য নিয়ে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ বলে মনে হচ্ছে। এই উত্তেজনা কোনো পক্ষের জন্য সুবিধা না এনে দিয়ে বরং নেতিবাচক ধারণাকে আরও বদ্ধমূল করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এখন বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। হাসিনার আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়ায় বিএনপিকে এ নির্বাচনে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে ভারত ও বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েনের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির স্বার্থ রক্ষার জন্য এই দলই সম্ভবত এখন ভারতের জন্য সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
তবে উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে আইসিজি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব উসকে দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর একটি সাধারণ কৌশল। অন্যদিকে ভারতের ভেতরে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদ, যার মধ্যে রয়েছে তাদের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি এবং অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে অতিমাত্রায় সতর্কতা, যা নয়াদিল্লির প্রতি বাংলাদেশিদের অসন্তোষকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নয়াদিল্লি সম্ভবত ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না, তবে ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন এ সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানোর একটি সুযোগ দিচ্ছে। এ সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে নয়াদিল্লির উচিত নির্বাচনের পরে সহযোগিতার মনোভাব প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়া এবং যাদের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে, তাদেরসহ রাজনৈতিক অংশীজনদের সঙ্গে বিস্তৃত পর্যায়ে যোগাযোগ জোরদার করা।
২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্য আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন এবং দুই দেশের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে আসা সম্ভাব্য উত্তেজনা তৈরির ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে বলে ক্রাইসিস গ্রুপের পর্যবেক্ষণ। প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও উভয় দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা স্বীকার করেন যে আরও ভালো সম্পর্ক উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক; তবু একটি ঝুঁকি রয়ে যায় যে তারা তিক্ততা ও অবিশ্বাসের আবর্তে আটকে যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সংঘাতের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও সম্পর্কের টানাপোড়েন যুদ্ধের চেয়ে কম মাত্রার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, এর মধ্যে রয়েছে সহিংস বিক্ষোভ, সাম্প্রদায়িক হামলা, সীমান্ত হত্যা ও বিদ্রোহী তৎপরতা।
আওয়ামী লীগের ওপর নয়াদিল্লির নির্ভরতার বিষয়টি তুলে ধরে আইসিজি ভবিষ্যতে শুধু বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের সব পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করাই শুধু নয়, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক যোগাযোগ আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে, যাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত যৌক্তিকভাবেই নিজেদের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে, তবে একই সঙ্গে দেশটিকে এটিও নিশ্চিত করতে হবে, যেন তাদের উদ্যোগগুলো উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হয় এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীল বিষয়গুলো বিবেচনায় থাকে। ২০২৪ সালের আগস্টে আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে নয়াদিল্লির উচিত নিজ থেকে আগ্রহী হয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা ও নতুন নীতি নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করা, যা তারা নতুন সরকারের কাছে তুলে ধরতে পারে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভারতবিরোধী মনোভাব থেকে সরে আসার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে আইসিজি বলেছে, এ ধরনের নির্বাচনী কৌশল ভারতের সেই বদ্ধমূল ধারণাকেই আরও জোরালো করবে যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রধান দলগুলো তাদের স্বার্থের পরিপন্থী, বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে—যে ধারণাটি ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের ভিত্তিতে তৈরি। এর পরিবর্তে সম্ভাব্য নতুন সরকারের উচিত হবে নয়াদিল্লির ইতিবাচক উদ্যোগগুলোয় সাড়া দেওয়া, একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা, বিদ্রোহ ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং আন্তসীমান্ত চোরাচালান ও অবৈধ অভিবাসন রোধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
আগামী বছরগুলোয় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সঠিক পথে পরিচালনা এবং একে স্থিতিশীলতার উৎস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ভারতের নিরাপত্তা–উদ্বেগ নিরসন করা হবে এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, বলেছে আইসিজি।