পরিবার খুঁজে পেলেন ২৫ বছর পর দেশে ফেরা সেই প্রবীণ
২৫ বছর পর দেশে ফিরে স্বজনদের খুঁজে না পাওয়া সৌদিপ্রবাসী প্রবীণ আবুল কাশেম অবশেষে পরিবারের দেখা পেয়েছেন। বুধবার বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মধ্যস্থতায় পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। দীর্ঘদিন পর সন্তানদের পেয়ে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আর বাবাকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সন্তানেরা।
মঙ্গলবার প্রথম আলো অনলাইনে ‘২৫ বছর পর দেশে ফিরে পরিবার খুঁজছেন সৌদিপ্রবাসী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। অবশেষে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় আবুল কাশেমের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। বুধবার বিকেলে তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, আবুল কাশেম কখনো চট্টগ্রামের হালিশহর, কখনো হাটহাজারী, নয়াবাজারসহ বেশ কিছু ঠিকানা বলছিলেন। ব্র্যাকের কর্মীরা সেসব এলাকায় গিয়ে খোঁজ নেন। পরে এসব এলাকার দেয়ালে পোস্টার লাগানো ও বিতরণ করেন ব্র্যাকের কর্মীরা। পোস্টারগুলো চোখে পড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সবুরের। তিনি বলেন, পোস্টারের ছবির লোকটি তাঁর পরিচিতি। পরে আবুল কাশেমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা ঢাকায় এলে বুধবার তাঁদের কাছে আবুল কাশেমকে হস্তান্তর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আবুল কাশেমের বড় ছেলে নূর হাসান। বাবাকে ফিরে পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ব্র্যাকসহ আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। অনেক দিন ধরে বাবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। আমরা জানতাম না, তিনি সৌদি আরবের কোথায় আছেন। তিনি যে দেশে এসেছেন, সেটাও আমরা জানতাম না। পোস্টার দেখে ও স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে ব্র্যাকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে কাজ করছি। এই প্রবাসীকেও আমরা ব্র্যাকের কাছে দিয়েছিলাম।’
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক স্কোয়াড্রন লিডার মো. রাসেল তালুকদার বলেন, ‘এমন ঘটনা আমরা সব সময় সিনেমাতেই দেখি। বাস্তবে এই প্রথম আমি ঘটনার সাক্ষী হলাম।’
এ সময় শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল আলম, সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান ও আবুল কাশেমের মেয়ে পারভীন আক্তার উপস্থিত ছিলেন।