মেঘনায় উদ্ধার হওয়া লাশ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের, ধারণা পুলিশ ও স্বজনদের
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদী থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও স্বজনেরা। ৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। গতকাল সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বেরোনোর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে গতকাল রাতে রমনা থানায় জিডি করেছিল পরিবার।
আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে গজারিয়ার বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করেন নারায়ণগঞ্জের কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।
কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ পাঠান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদীতে লাশটি ভাসছিল। পরে স্থানীয় লোকজন জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এর মাধ্যমে তাঁদের জানান। তাঁরা ঘটনাস্থল গিয়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে লাশটি উদ্ধার করেন। সন্ধ্যার দিকে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
লাশের ছবি রমনা থানায় পাঠিয়েছেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘লাশটি নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের বলে তাঁর স্বজনেরা ছবি দেখে শনাক্ত করেছেন।’
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া বিভুরঞ্জন সরকারের ছবির সঙ্গে মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহটির মিল রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহটি তাঁরই। মরদেহটি মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বিভুরঞ্জন সরকারের শ্যালক দীপঙ্কর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাশটির ছবি আমরা দেখেছি। এটি আমার ভগ্নিপতির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। লাশ আনার জন্য ইতিমধ্যে আমার ভাগনে (ঋত সরকার) ও ভগ্নিপতির এক ভাই মুন্সিগঞ্জের দিকে রওনা হয়েছেন।’
মুন্সিগঞ্জের পথে থাকা বিভুরঞ্জন সরকারের ছেলে ঋত সরকার সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহটি তাঁর বাবার হতে পারে। তাঁরা এখন নারায়ণগঞ্জ পার হচ্ছেন।
বাবার নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে ঋত সরকার গত রাতে রমনা থানায় জিডি করেন। তাতে তিনি বলেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বলে বের হন বিভুরঞ্জন সরকার। বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁর বাসায় ফেরার কথা ছিল। তিনি মুঠোফোনটি বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। রাত ৯টার মধ্যে তিনি বাসায় না ফিরলে আজকের পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছেলে জানতে পারেন যে তিনি (বিভুরঞ্জন সরকার) অফিসে যাননি। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও বিভুরঞ্জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।