আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি আজ বাংলাদেশে আসছেন

করিম খান

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খান দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন আজ মঙ্গলবার। পাঁচ দিনের সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যাবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি এবার বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না, সেটি তদন্ত করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার তাগিদ দেবেন।

আরও পড়ুন
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির
প্রথম আলো ফাইল ছবি

রোম সনদ অনুযায়ী, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না, সেটার তদন্ত করছে আইসিসি। রোম সনদের অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমার রোম সনদে স্বাক্ষর করেনি। দেশটি আইসিসির তদন্তের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

রোহিঙ্গা বিতাড়নের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশে কাজ করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক এই আদালত একটি সমঝোতা সই করেছে। রোম সনদ অনুযায়ী, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হলে তার তদন্ত করে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিসি। তদন্ত শেষে আইসিসি অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আদালতে হাজির করে।

আরও পড়ুন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সফরের প্রথম দিন আজ মঙ্গলবার আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তিনি আগামীকাল বুধবার এবং পরদিন বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে থাকবেন। তিনি সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ মিজানুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন করিম খান। ওই সফরের সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, রোহিঙ্গা বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের সাক্ষ্য-প্রমাণের জন্য তাঁকে আবার বাংলাদেশে আসতে হবে। তাঁর সহকর্মীরা কয়েক দফায় বাংলাদেশ সফর করবেন।

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের নৃশংসতার মাধ্যমে বিতাড়নের প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে প্রত্যাবাসন নিয়ে কথাবার্তা হলেও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর নৃশংসতার জবাবদিহি এখনো নিশ্চিত হয়নি।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বছরের সফরের মতো করিম খান এবারও বাংলাদেশ সফরের সময় কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিশেষ করে আইসিসির তদন্তে সাক্ষ্যদানের মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য রোহিঙ্গাদের তিনি নানাভাবে উৎসাহ জোগাবেন।