আমি শুধু সমাজের কথা বলেছি

রংপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেছেন, নাপিতের সঙ্গে চিকিৎসকের বিয়ে তিনি মেনে নিতে পারেননি—এ কথা তিনি বলেননি। তিনি বলেছেন, দেশের একটা সংস্কৃতি আছে, সেই সংস্কৃতিতে এ রকম ‌অসামঞ্জস্য সমাজ মেনে নেবে না।

রংপুর সিআইডি কার্যালয়ে ২৩ ডিসেম্বর মিলু মিয়া বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলন  করেন। তাতে এক নারী চিকিৎসক, তাঁর নাপিত স্বামী ও সন্তানকে হাজির করেন। ওই নারী চিকিৎসকের বাবা তাঁর মেয়ে (৩৪) অপহৃত হয়েছেন বলে মামলা করেছিলেন বলে জানান মিলু বিশ্বাস। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারী কাকে বিয়ে করেছেন, তা নিয়ে সিআইডির এই সংবাদ সম্মেলন আলোচনার জন্ম দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে গতকাল রোববার ‘নাপিতকে চিকিৎসকের বিয়ে, মানতেই পারছেন না সিআইডির এই এসপি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ আদালতের নির্দেশনা এবং আইন; দুই-ই লঙ্ঘন করেছে এমন মন্তব্যও করেছেন নেটিজেনরা। এ বিষয়ে আজ সোমবার রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার ই–মেইলযোগে ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। সেখানেই এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

মিডিয়ায় নারী ও শিশু উপস্থাপনের বিষয়ে সিআইডির এই পুলিশ সুপার বলেন, ‘‌আমি নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতন হয়ে নারীকে সম্মানিত করে সোফায় বসতে দিয়েছি। ভদ্র ও শালীন আচরণ করেছি, শিশুকে বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার খাইয়ে শিশু অধিকার ও আচরণ সম্পর্কে সতর্ক থেকেছি। যাকে খুশি তাকে যে কেউ বিবাহ করতে পারে। এ নিয়ে আমার কোনো মত নাই, আমি শুধু সমাজের কথা বলেছি।’

মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, গ্রেপ্তার থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর প্রথম স্ত্রীকে হত্যায় প্ররোচনা ও মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা আছে।

ব্যাখ্যায় মিলু মিয়া বিশ্বাস আরও বলেন, চিকিৎসক নারীর বাবা তাঁর মেয়ে ও নাতিকে (চিকিৎসকের পূর্বের স্বামীর সন্তান) উদ্ধার করা হচ্ছে না বলে বিভিন্ন মহলে সিআইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তা ছাড়াও চিকিৎসকের আগের স্বামী আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারা অনুযায়ী ছেলেকে পাওয়ার জন্য তল্লাশি পরোয়ানার আবেদন করেন। কিন্তু আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের উদ্ধার করতে পারেননি।

পরে সিআইডি রংপুর টিম ২২ ডিসেম্বর ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আসামিকে, নারী চিকিৎসককে ও শিশুটিকে উদ্ধার করে। মিলু বিশ্বাসের দাবি, ‌এরপর যথাযথ মানবাধিকার মেনে সাংবাদ সম্মেলন করা হয়।

পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, ‌‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো পেশার প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করি নাই বা ব্যক্তিগতভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার কোনো ইচ্ছাও পোষণ করি নাই। তারপরও যদি আমার কোনো কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, সে জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

আরও পড়ুন